স্বাস্থ্যখাতে তালিবানের নজরদারি, অনিয়মে বন্ধ ৪০ ক্লিনিক ও ২৩ ফার্মেসি

সাইফুল ইসলাম

1
884

আফগানিস্তানের দক্ষিণ হেলমান্দ প্রদেশে ২৩টি ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে বন্ধ করে দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার এক কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে পাঝয়ুক আফগান নিউজ।

তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-পরিচালক মৌলভী মুহাম্মাদ কাসিম রিয়াজ পাঝয়ুক আফগান নিউজকে বলেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে কি না, তা পরিদর্শনের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছেন। গত দুইদিনে এই কমিশন ২১৮টি ফার্মেসি পরিদর্শন করেছেন।
কাসিম রিয়াজ বলেন, এই কমিশন গঠিত হয়েছে প্রাদেশিক সরকার, গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং পৌরসভার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে। এছাড়া জনস্বাস্থ্য আইন রিভিউ বিষয়ক একটি দলও এই কমিশনে আছেন।

সুদক্ষ এই কমিশন ফার্মেসিগুলো পরিদর্শন করে ২৩টি ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া, চার টন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জব্দও করেছেন তারা।

মেডিকেল বিশেষজ্ঞদের মতে, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রক্তকে বিষাক্ত বানিয়ে ফেলে, কিডনি ও লিভার বিকল পর্যন্ত করতে পারে। এমনকি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের কারণে একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তালিবান কর্তৃক ২০২১ সালের আগস্টে ইমারতে ইসলামিয়া গঠনের পর থেকেই আফগানিস্তানজুড়ে জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে বিশেষ নজর দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে নিয়মিত মেডিকেল সেন্টার, ক্লিনিক ও ফার্মেসিগুলোতে নজরদারি করছেন ইমারতে ইসলামিয়া কর্তৃপক্ষ।

এর আগে রোগীদেরকে ‘কোড-ভিত্তিক’ প্রেসক্রিপশন দেওয়ার অপরাধে হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ্‌তে ৪০টি প্রাইভেট ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা:সায়েদ আহমেদ শহীদ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, গত ৫ মাস ধরেই তাদের পর্যবেক্ষণ টিম কাজ করছে।
ডা:সায়েদ আহমেদ জানান, প্রথমে ৪০ জন ডাক্তারকে সতর্কতামূলক নোটিশ ইস্যু করা হয়। তবে তারা সতর্কতা উপেক্ষা করে ‘কোড-ভিত্তিক’ প্রেসক্রিপশন প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে গেলে ঐ ৪০ জন ডাক্তারের ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান যে, ক্লিনিকগুলোকে প্রথম দফায় ৩ দিনের জন্য, দ্বিতীয় দফায় ১৫ দিনের জন্য এবং তৃতীয় দফায় আবারও অপরাধ করলে তাদেরকে শরিয়া আদালতে সোপর্দ করা হবে।

‘কোড-ভিত্তিক’ প্রেসক্রিপশন প্রদান সম্পর্কে তিনি বলেন যে, এই ডাক্তারদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব ফার্মেসি রয়েছে। এখন তারা রোগীদের প্রেসক্রিপশনে (ব্যবস্থাপত্র) অসুধের নামের পরিবর্তে নির্দিষ্ট কোড লিখে দেন, যাতে করে ঐ রোগীরা তাদের ফার্মেসি থেকেই ওষুধ কিনতে বাধ্য হয়। আর এই অপরাধেই বার বার সতর্ক করার পর শেষ পদক্ষেপ হিসেবে তাদের ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় ইমারতে ইসলামি কর্তৃপক্ষ।



 

তথ্যসূত্র:

1. 23 Helmand pharmacies shut for selling expired drugs
https://tinyurl.com/bdz3wtap
2. 40 private clinics shut in Helmand
https://tinyurl.com/874k95hv

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাশ্মীরে কর্নেলসহ ৪ ভারতীয় অফিসার নিহত
পরবর্তী নিবন্ধআল্লামা আহমদ শফী (রহ.): বাংলাদেশের এক অবিস্মরণীয় আলেমে দ্বীন