শরীয়তপুরে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মামলার অপর এক আসামি এখনো পলাতক রয়েছে।
আটক হওয়া আসামিরা হলো— উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের মৃত লালু সরদারের ছেলে ইব্রাহিম সরদার দুদুল (২০), একই গ্রামের আলম মাঝির ছেলে তুষার মাঝি (২২), সুরেশ্বর গ্রামের আলম হাওলাদারের ছেলে নাহিদ হাওলাদার (১৯) ও তাদের বন্ধু শাকিব হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদের দিন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ওরা। এ ঘটনায় শনিবার নড়িয়া থানায় মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সন্ধ্যায় ঘোরাঘুরি শেষে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে নানি বাড়িতে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরী। পথে চন্ডিপুর এলাকার ভিআইপি মোড় থেকে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে তাকে অপহরণ করে। পরে ভুক্তভোগীকে একটি অটোতে উঠিয়ে নিয়ে সুরেশ্বর দরবারের একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখে।
বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সারাদিন ওই পরিত্যক্ত ঘরটিতে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীকে একাধিকবার পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গতকাল শনিবার সকালে নাহিদ হাওলাদার, শাকিব-সহ অজ্ঞাত আরও একজন সেখানে যায়। পরে তারা সবাই মিলে ভুক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। দুপুর বারোটার দিকে ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে গেলে ইব্রাহিম সরদার দুদুল তাকে সুরেশ্বর দরবারের সামনে থেকে অটোতে তুলে দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
বাড়ি ফিরে ভুক্তভোগী তার বোনদের কাছে ঘটনা খুলে বললে তারা তাকে নড়িয়া থানায় নিয়ে যান। নড়িয়া থানার পুলিশ রাতেই তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার দুপুরে সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার ছাত্রীর বড় বোন বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। পুলিশ ওই মামলার আসামি ইব্রাহিম সরদার দুদুল, তুসার মাঝি, শাকিব ও নাহিদ হাওলাদারকে আটক করেছে।
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বড় বোন বলেন, ‘আমার বাবা নেই। আমরা ৭ বোন মাকে নিয়ে থাকি। পাষণ্ডরা পশুর মতো আমার ছোট বোনটাকে নির্যাতন করেছে। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, ‘ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।’
তথ্যসূত্র:
১. তিন দিন আটকে রেখে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪
– https://tinyurl.com/msewjbj8