একলক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় রাতভর ব্যবসায়ীকে হলের রুমে আটকে নির্যাতন চালালো ঢাবি ছাত্রদল

0
131

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের একটি কক্ষে এক ব্যবসায়ীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ঢাবি ছাত্রদলের একাংশ ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ঈদ উপলক্ষে পলাশী মোড়ে অস্থায়ী গরু-ছাগলের বাজার থেকে চাঁদা আদায়ের অংশ হিসেবে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা দাবি করা হয়।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান আপন পলাশীর দোকানমালিক সমিতির সেক্রেটারি। তাকে  বৃহস্পতিবার (০৫ জুন)  রাতভর সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ১৯ নম্বর রুমে আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুক্রবার (০৬ জুন) সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে হলে থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আপন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছাত্রদল নেতা সোহেল রানা সিয়াম একাধিকবার ফোন করে তাকে হলে ডেকে নেয়। পরে বাবু মিয়ার সহযোগিতায় ১৯ নম্বর রুমে আটকে রেখে সারারাত ধরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় এবং পলাশীর অস্থায়ী পশুর হাটে চাঁদাবাজির তথ্য প্রকাশ না করার জন্য চাপ দেয়া হয়। শেষে তার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থী বাবু মিয়া (আইন বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ, ২০১৭-১৮ সেশন) এবং সোহেল রানা সিয়াম (পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষ, ২০১৮-১৯ সেশন)। তারা দুজনেই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানিয়েছে হল প্রশাসন।

এ ছাড়া ব্যবসায়ী নির্যাতনে অভিযুক্তদের সঙ্গে যুক্ত ছিল আরও তিন বহিরাগত ছাত্রদল নেতা। তারা হলেন— মো. তারেক (দর্শন বিভাগ, ঢাকা কলেজ), কমল রায় (দর্শন বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ২০১৮-১৯ সেশন) এবং মো. মুজাহিদ হোসাইন পলাশ (ট্রিপল-ই)। তারা নিজেদের ছাত্রদলের কর্মী পরিচয় দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন হলের সিনিয়র হাউজ টিউটর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রুহুল আমিন, সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ ওমর ফারুক।

অধ্যাপক ওমর ফারুক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীকে আটকে রাখার কথা স্বীকার করেছে।

অন্যদিকে, একই হাটে ছাগল কিনতে গিয়ে চাঁদাবাজির শিকার হন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দিন। তিনি জানান, আমি আমার বোনের জন্য একটি ছাগল কিনতে গেল একটি চক্র চাঁদা না দিয়ে আমাদের যেতে দিচ্ছিল না। এ সময় ভিডিও করতে গেলে চাঁদাবাজরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের দাবি, পলাশীতে অনুমোদনহীনভাবে বসা পশুর হাট থেকে ‘হাসিল’, ‘সালামি’, ‘দেন’ ইত্যাদি নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে ছাত্রদলের দুটি গ্রুপ— সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও লালবাগ থানা ছাত্রদল।


তথ্যসূত্র:
১.ঢাবিতে ব্যবসায়ীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতন-লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি, নেপথ্যে ছাত্রদল
-https://tinyurl.com/4cje3yx7

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধএনসিপির কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি আওয়ামীলীগ নেতারা
পরবর্তী নিবন্ধদেশে শেখ পরিবারের নামে হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান ছিল