
ঢাকার নবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ওয়াকফ করা কয়েক শত জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ নেতার নাম ফজলুর হক ফজল। তার বিরুদ্ধে নবাবগঞ্জ থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সরকারি জমির মাটি বিক্রি সহ নানান অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের বিপ্রতাশুল্লা মৌজার ওয়াকফকৃত প্রায় সাড়ে ৪শ’ শতাংশ জমি দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করেছে। ফজলুর হক ফজল উত্তর বাহ্রা এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ওয়াকফকৃত জমির পাশে ফজলুর জমি রয়েছে এ সুযোগে নিজের জমির মাটি বিক্রির পাশাপাশি ওয়াকফকৃত জমির মাটিও কেটে বিক্রি করে দিয়েছে সে।
গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, সম্প্রতি কৃষি জমি কাটা শুরু করে ফজলু। তবে স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়াকফ জমির মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়েছে ফজলু। মাটি বিক্রি করতে ইতোমধ্যে জমিটি ১০/১৫ ফুটের বেশি গভীর করেছে সে।
কাগজপত্রে দেখা যায়, বিপ্রতাশুল্লা মৌজার আরএস ৫০৭, ৫৮১, ৫৮৫, ৫৮৬, ৫৮৮, ৫৮৯, ৫৯০, ৫৯১, ৫৯৬, ৫৯৭, ৫৯৮, ৫৯৯, ৬০০, ৬০১ ও ৬০২ এর বেগম ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ স্টেট এর সম্পত্তি। বেগম ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ স্টেটের পক্ষ থেকে সৈয়দ ওবায়েদ সাকীকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফজলু জমিটিকে নিজের বলে দাবি করে। এরপর দেদারছে মাটি কেটে বিক্রি করে সে।
গণমাধ্যমের কাছে আসা কয়েকটি স্ট্যাম্পে দেখা যায়, ফজলুল হক ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ স্টেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ ওবায়েদ সাকীর নিকট হতে ১৫/৭/২০১৭ তারিখে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিপ্রতাশুল্লা মৌজার আরএস ৫৯৯, ৬০০, ৬০১ দাগে ১৮৫ শতাংশ। অন্য একটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে একই মৌজার আরএস ৫০৭, ৫৮১, ৫৯৬, ৫৯৭, ৫৯৮ ও ৬০২ দাগে ২৪৯ শতাংশ এবং আলাউদ্দিন খান একই ব্যক্তির কাছ থেকে আরএস ৫৮৮, ৫৮৫, ৫৯০, ৫৮৬, ৫৮৯ ও ৫৯১ দাগে মোট ২৭৮ শতাংশ সব মিলিয়ে ৭১২ শতাংশ জমি দেখাশুনার দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু সেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে শুধু ব্যবহার করতে পারবে।
স্থানীয়রা আরও বলেন, ফজলু ১৭-১৮ বছর আওয়ামী লীগের আমলে দেদারছে মাটির ব্যবসা করেছে। কৃষি জমিকে পুকুরে পরিণত করেছে মাটি কেটে। ফজলুল হক ফজলু নয়নশ্রী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পলাশ চৌধুরীর খুবই কাছের একজন লোক। বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে ওয়াকফ স্টেট প্রায় ২৫ বিঘা জমির মাটি কাটে। ২০১৪ সালের পর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। ২০১৪ সালে পূর্বে ফজলুল হক ফজলু জামশা বাজারে তার একটি সেলুনের দোকান ছিল। বর্তমানে সে এনবিসি ইট ভাটা মালিক।
তথ্যসূত্র:
১. আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে ওয়াকফ সম্পত্তির মাটি বিক্রির অভিযোগ
– https://tinyurl.com/4bbuudhz