নাবলুসে মসজিদে হানা দিয়ে কুরআন শরীফ পুড়িয়ে দিল ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীরা

0
66

ইহুদিবাদী ইসরায়েলের মদদপুষ্ট দখলদার সন্ত্রাসী বসতি স্থাপনকারীরা (Settlers) শুক্রবার সন্ধ্যায় ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলীয় পশ্চিম তীরের নাবলুসের খিরবেত তানা এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক “বেইত আস সেইখ” মসজিদে হামলা চালিয়ে পবিত্র কুরআনের একাধিক কপি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, এই বর্বর হামলা হয়েছে দখলদার ইহুদি সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তা ও পাহারায়।

খিরবেত তানার প্রাচীন এই মসজিদটি শত শত বছরের পুরনো এবং ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার বহন করে। স্থানীয় প্রবীণরা জানান, মসজিদটি পাথর ও মাটি দিয়ে নির্মিত হয়েছিল এবং যুগ যুগ ধরে নামাজ ও শিশুদের ইসলামি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি একটি প্রাথমিক স্কুলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, যেহেতু ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী স্থানীয় স্কুলটি ধ্বংস করে দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা থায়ের হান্নানি বলেন, “এই মসজিদটি হলো আমাদের জমির উপর দৃঢ়তার প্রতীক। মসজিদ ও আশেপাশের এলাকার বারবার আক্রমণ প্রমাণ করে যে দখলদাররা পরিকল্পিতভাবে এখানকার মূল অধিবাসীদের উচ্ছেদ করতে চায়।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “কোবি” নামের এক কুখ্যাত দখলদার ইহুদি বসতি স্থাপনকারী খিরবেত তানায় শত শত জমি দখল করে একটি বসতি স্থাপন করেছে। এই ব্যক্তি ও তার সন্ত্রাসী দল মসজিদ, তাবু, গুহা, সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এমনকি মৌমাছির বাক্স পর্যন্ত ধ্বংস করেছে। আর এ সবকিছুই করেছে ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনীর সহযোগিতায়।

সে বারবার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে থাকে, আর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী নিয়মিত সামরিক বুলডোজার দিয়ে এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।

এই ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপ, যারা সব সময় ধর্মীয় স্বাধীনতার বুলি আওড়ায়, তারাই ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের এসব ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের একনিষ্ঠ সমর্থক হয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কুরআন পোড়ানো, মসজিদে আগুন দেয়া, স্কুল ধ্বংস, এবং মুসলিমদের উচ্ছেদের এই ধারাবাহিকতা আসলে একটি ‘জাতিগত নির্মূল অভিযানের’ অংশ। আর এর প্রধান লক্ষ্য হলো মুসলিমদের পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।

নাবলুসের “বেইত আস সেইখ” মসজিদে কুরআন শরীফ পোড়ানো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি দখলদার ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের ইসলামের বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধের এক জলজ্যান্ত প্রমাণ। এই অবৈধ রাষ্ট্রটি শুধুমাত্র জমি দখল করছে না—তারা ধ্বংস করছে ইতিহাস, এবং ধ্বংস করছে মানুষের ধর্মীয় পরিচয়। আজ ফিলিস্তিন জ্বলছে, কাল হয়তো পুরো মুসলিম বিশ্ব জ্বলবে—যদি আমরা এখনই জাগ্রত না হই।


তথ্যসূত্র:
1. Settler groups burn copies of Quran in Nablus mosque
– https://tinyurl.com/9978bcjs

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিসাইলের ভয়ে হার্ট অ্যাটাকে ইসরায়েলি নারীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচাঁদাবাজির অর্থসহ হাতেনাতে আটক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা