ইবিতে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তাকারী সেই শিক্ষককে চাকুরি হতে অপসারণ

0
62

কথার অবাধ্য হলে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনাল নম্বর কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা কাপড় নিয়ে কটূক্তি, তাদের গালাগাল করার অভিযোগ ওঠা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হকের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনাপূর্বক গত ২২/১২/২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সভার ৪৪ নম্বর প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (4) i (b) ও (e) ধারা মোতাবেক তাকে বাৎসরিক ১ (এক)টি ইনক্রিমেন্ট/ধাপ বাতিল করা হয় এবং তাকে সিন্ডিকেট সভার (২২-১২-২০২৪) তারিখ থেকে ১ (এক) বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, ‘ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬/০২/২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ গত ৩১/০৫/২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৮তম (সাধারণ) সভার ৭ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে তার এহেন কর্মকাণ্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির চরম পরিপন্থি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (F) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১/০৫/২০২৫ তারিখ থেকে চাকুরী হতে অপসারণ (Dismissal from Service) করা হলো।’

জানা যায়, একাধিক গুরুতর অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ শাস্তিকে পর্যাপ্ত মনে না করে হাফিজুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার দাবি জানান। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল, কথার অবাধ্য হলে পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা কাপড় নিয়ে কথা বলা, বাজারের মেয়ে বলে গালিগালাজ, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হেনস্তা, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারার ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, অন্যান্য শিক্ষকদের নাম নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে অপমান, অপদস্থ ও চাপ প্রয়োগ ইত্যাদি।


তথ্যসূত্র:
১. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ
– https://tinyurl.com/28f8nm2h

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানে বিদআত ও শির্ক চর্চার মাজার উচ্ছেদ করল ইমারতে ইসলামিয়া প্রশাসন
পরবর্তী নিবন্ধজাবিতে ফের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কটূক্তি; সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে বরখাস্ত শাতিম