
সিরিয়ার গোলান মালভূমির কাছে অবস্থিত কুনেইত্রা প্রদেশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে দুর্বৃত্ত ইসরায়েলি বাহিনী। ১১ জুলাই, শুক্রবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আল-রাফিদ শহরের কাছে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-ইখবারিয়া সিরিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী সীমান্ত বেড়ার কাছে, আল-রাফিদের পশ্চিমে, একাধিক জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে বহু ডুনাম (১ ডুনাম = ১,০০০ বর্গমিটার) জমি পুড়ে যায়।”
নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আল-ইখবারিয়া জানিয়েছে যে জাতিসংঘের বাহিনী প্রাথমিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি সংবাদমাধ্যমটি।
এর আগে একই দিন, কুনেইত্রার ডেপুটি গভর্নর মুহাম্মদ আল-সাঈদ সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ইসরায়েল ওই অঞ্চলে আটটির বেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। এসব ঘাঁটি কুনেইত্রার উত্তরে — বিশেষত ইয়ারমুক অববাহিকার ভেতরে গড়ে তোলা হয়েছে, যা সরাসরি ১৯৭৪ সালের ডিসেংগেজমেন্ট চুক্তির লঙ্ঘন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, “এই ঘাঁটিগুলোর কারণে প্রায় ৬,০০০ হেক্টর (১৪,৮০০ একর) কৃষি জমি ও পশু চারণভূমি এখন কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বহু পরিবার তাদের গবাদিপশুর খাবার এবং জীবিকা হারাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, দখলদার ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ অঞ্চল দখল করে নেয় এবং পরে তা একতরফাভাবে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করে।
মূলত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার ভেতরে ইসরায়েলি হামলা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
ইসরায়েল শুধু হামলাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তারা ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতির পর গঠিত ‘বাফার জোন’ বা নিরপেক্ষ অঞ্চলকে কার্যত ‘অকার্যকর’ ঘোষণা করে সেখানে নিজের সেনা মোতায়েন এবং নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র:
1. Israel deliberately sets fire to Syrian lands near Quneitra
– https://tinyurl.com/3dw7zeak