
ভারতের আসামের গোলপাড়া জেলার পাইকান সংরক্ষিত বন থেকে প্রায় ১,০৮০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এদের অধিকাংশই বাংলাভাষী মুসলিম সম্প্রদায়ের। জেলা প্রশাসন প্রায় ৪০টি বুলডোজার এবং কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। এতে ২,৭০০টি বসতবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়, যার ফলে এসব পরিবার এখন আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছে।
এর আগে, আদানি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আসামের ধুবরি জেলায় প্রায় ১,৪০০টি বাংলাভাষী মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, যার ফলে তাদের জীবনে বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।
গত ১৩ জুলাই মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, উচ্ছেদকৃত জমি কৃষ্ণাই রেঞ্জ এর আওতাধীন পাইকান সংরক্ষিত বনের অংশ। তবে, উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দারা দাবি করেছেন, তারা এই জমিতে বহু বছর ধরে বসবাস করে আসছেন এবং এটি সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণার আগে থেকেই সেখানে তাদের বসবাস ছিল।
মিজানুর রহমান নামে উচ্ছেদ হওয়া এক বাসিন্দ বলেন, আমরা বহু বছর ধরে এখানে বসবাস করে আসছি। সরকার আমাদের জন্য বিকল্প কোন জায়গা দেয়নি। এখন আমরা কোথায় যাব?
আসাম সরকার ১৯৫৯ সালে পাইকানকে একটি সংরক্ষিত বন হিসেবে মনোনীত করার প্রস্তাব করে, এবং ১৯৮২ সালে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা দেয়।
উল্লেখ্য যে, গোলপাড়া জেলার ৪৭২টি গ্রাম গত কয়েক দশকে ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙনের কারণে বিলীন হয়ে গেছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে পড়ে। এই সকল পরিবারই জীবিকার জন্য পাইকান সংরক্ষিত বনে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু এখন তারা সেই আশ্রয় থেকেও উচ্ছেদ হচ্ছেন।
এর মধ্যে গত ১৬ জুন গোলপাড়া শহরের কাছে হাসিলাবিল নামক জলাভূমিতে ৬৯০টি পরিবারের ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়, যার ফলে গত এক মাসে আসামের পাঁচটি জেলায় অন্তত ৩,৫০০ পরিবার তাদের বাসস্থান হারিয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া এইসব পরিবারের অনেকে পাইকান সংরক্ষিত বনে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু এখন তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
এদিকে, আসামের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেছে যে ‘কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। বাংলাদেশি নাগরিকদের উচ্ছেদ করা হবে।’
ভিডিও দেখুন:
তথ্যসূত্র:
1. Assam: 1,080 families evicted in Goalpara, days after 1,400 families displaced in Dhubri, mostly Bengali Muslims
– https://tinyurl.com/3pf9aawd