বিনা অপরাধে পাঁচ বছর কারাগারে আটক থাকা রাজধানীর পল্লবী এলাকার বেনারসি কারিগর মো. আরমান কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি দেওয়ার পর তাকে পরিবারের লোকজন বাড়ি নিয়ে গেছেন। ওই কারাগারের জেল সুপার আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরমানের মুক্তিলাভের খবরে তার মা, স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনরা কারা ফটে অপেক্ষায় থাকেন। দুপুরের দিকে কারাগার থেকে বের হয়ে আসলে আরমানের দুই সন্তান ও স্বজনরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় স্বজনরা আরমানকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে এক মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। আসামিদের দেওয়া তথ্যে তাদের সহযোগীদের ধরতে ডিবির এসআই নূরে আলম সিদ্দিকী পল্লবীর বিহারি ক্যাম্পের এক বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ শাহাবুদ্দিন বিহারি ও তার দুই সহযোগীকে আটক করে।
এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা হয় মাদক দ্রব্য আইনে। পরে ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শাহাবুদ্দিনসহ গ্রেপ্তার তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হন শাহাবুদ্দিন।
২০১২ সালের ১ অক্টোবর মামলায় শাহাবুদ্দিন ও তার দুই সহযোগীর প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী ঢাকার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এরপর পলাতক শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পল্লবীর ব্লক-এ, সেকশন ১০ নম্বর এলাকায় অভিযান চালায় পল্লবী থানার পুলিশ। এ অভিযানে ছিলেন তৎকালীন ওই থানার এসআই রাসেল, যিনি বর্তমানে মিরপুর মডেল থানায় কর্মরত। আরমান বাসায় নাশতা করে চা পানের জন্য পাশের একটি চায়ের দোকানে যান।
সেখান থেকে শাহাবুদ্দিনের বাবার নামের সাথে মিল থাকায় আরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে আরমানকে কাশিমপুর কারাগার-২ এ রাখা হয় ।
পরে আইনজীবী হুমায়ূন কবির পল্লবের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ দীর্ঘ ৫ বছর পর আরমানকে মুক্তি দেওয়া হয়।