ভারতে মুসলিম নিধনযজ্ঞ শুরু করতে যেন আর তর সইছে না উগ্র হিন্দুদের। একের পর এক ইস্যু দাড় করিয়ে তারা হয়তো দ্রুত সময়ের মধ্যেই মুসলিম গণহত্যা শুরু করে দিতে চাইছে। গো-রক্ষার নামে পিটিয়ে মুসলিম হত্যার পুরানো ইস্যুকে নতুন করে আবারো সামনে আনছে।
সম্প্রতি হরিয়ানার নুহতে গো-রক্ষকদের গুলি চালানো এবং জোরপূর্বক মুসলমানদের অপহরণ করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
ভিডিওগুলির একটিতে দেখা যায়, একটি হিন্দুত্ববাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী রাওলির একজন দীন মজুর কর্মী রহিশকে তার বাড়ি থেকে লাঞ্ছিত করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যখন তার প্রতিবেশীরা এবং অন্যরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন হিন্দু সন্ত্রাসীরা ক্রমাগত গুলি চালায় এবং তাদের দূরে থাকার হুমকি দেয়।
আরেকটি ভিডিওতে, রাহিশের বড় ভাই হকমুদ্দিন মোহাম্মদকে একইভাবে লাঞ্ছিত করেছে। লোকেরা থামানোর চেষ্টা করলে হত্যা করার হুমকি দেয় উগ্র হিন্দুরা।।
তাদের বলতে শোনা যায়, “ওকে [হকমুদ্দিন] বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না.. দূরে থাকুন.. আমরা আপনাকে গুলি করব।” (ছোড়নে কি কোশিশ মাত করিও.. দূর হো যাও.. গলি মার দেনে)।
অনলাইনে প্রচারিত তৃতীয় আারেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সশস্ত্র হিন্দু জনতা শেখপুর থেকে একটি গাড়িতে করে এস একজন মুসলিম ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
রাহিশ ও হকমুদ্দিনের বড় ভাই আস মোহাম্মদ বলেছেন, চরমপন্থী হিন্দু সংগঠন বজরং দলের সদস্যরা গ্রামে অভিযান চালায়। জাফরান শাল পরা সশস্ত্র হিন্দুরা গুলি চালাতে শুরু করে এবং হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিতে থাকে।
“তারা আমার মা এবং আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে গালিগালাজ করেছে।” রহিশের ভাই আস মোহাম্মদ বলেন, “ওরা আমার ভাইকে অপহরণ করে পুলিশে দিয়েছে।”
“আমি ফিরোজপুর ঝিরকা আদালতে আমার ভাইয়ের সাথে দেখা করি; তাকে নির্মমভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছিল; তিনি অজ্ঞান ছিলেন এবং কথা বলতেও পারছিলেন না।…যখন আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসা করি যে আমার ভাইকে কারা মারধর করেছে, তারা বলে যে এটি তারা নয়, বজরং দল করেছে।”গোহত্যায় জড়িত থাকার মিথ্যে অভিযোগে তাকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে জেলে পাঠানো হয়েছে।
হকমুদ্দিনের মা বলেন, “আমার ছেলেকে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং সেই উগ্র হিন্দু জনতা তাকে রাস্তায় টেনে নিয়ে যায়। তারা আমার ছেলে হকমুদ্দিনের কাছ থেকে ৪০,০০০ টাকা এবং একটি মোটরসাইকেলও লুট করেছে। মোটরসাইকেলটি পরে থানায় পাওয়া গেছে।”
হকমুদ্দিনের স্ত্রী তার ৪ বছর বয়সী ছেলের শরীরে ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে বলেন, “বাবাকে টেনে নিয়ে যাওয়া দেখে কাঁদতে শুরু করলে তারা এই শিশুটিকেও মারধর করে। আমার স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে তারা আমাকে মারধর ও গালিগালাজ করেছে।”
“যারা আমাদের উপর হামলা করেছে তারা আমাদের পাশের গ্রামের। এ কারণেই আমরা তাদের চিনি।”
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হিন্দুত্ববাদী পুলিশ অন্যায় করছে।
“আমরা হামলাকারীদের নাম জানালেও পুলিশ কেন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে?” অথচ, আসল হামলাকারীদের ধরছে না।
এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতেই অভিযান চালানো হয়েছে বলে দাবি করে সন্ত্রাসী গৌরক্ষকরা ভিডিও প্রকাশ করেছে।
ভারতে একে একে নামাজে বাধা, গণহত্যার আহ্বান, হিজাব বিতর্ক ও হিজাব ইস্যু নিয়ে হামলা-আক্রমনের পর এখন আবার গো-রক্ষার ইস্যু সামনে এনে মুসলিমদের উপর চূড়ান্ত গণহত্যা চালানোর তোড়জোড় শুরু করেছে হিন্দু সন্ত্রাসীরা। অবস্থাদৃষ্টে তাই মুসলিমদেরকে নিজের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে জোড় তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন হকপন্থী উলামায়ে কেরাম।
প্রতিবেদক : মাহমুদ উল্লাহ্
তথ্যসূত্র:
1. violent raids by cow-vigilantes grips haryanas muslim villages/
– https://tinyurl.com/4s33hxwx
2. Bihar: তরুণকে পিটিয়ে খুন, অভিযোগ গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে
– https://tinyurl.com/2p8fvtx2
– https://tinyurl.com/mwtjsp3c