দখলদার চীনের জিরো কোভিড নীতিতে পূর্ব তুর্কীস্তানে মৃত্যুর মিছিল

আবু-উবায়দা

0
702

গত আগস্টের শুরু থেকে দখলদার চীনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত কঠোর লকডাউনের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ জন উইঘুর মুসলিম অনাহারে ও ওষুধের পর্যাপ্ত যোগানের অভাবে মারা গেছে। রেডিও ফ্রি এশিয়াকে (আরএফএ) স্থানীয় বাসিন্দারা এবং কর্মকর্তারা উক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পূর্ব তুর্কীস্তানের ঘুলজা শহরের গুরকিরাতমা গ্রামের বাসিন্দারা আরএফএ-কে জানায় যে, অনাহারের কারণে সেখানের ১০টি পরিবারের সদস্যদের ভয়ানক রকমের স্বাস্থ্যহানি ঘটেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা আরএফএ-কে বলেন, জিরো-কোভিড লকডাউন কার্যকর হওয়ার ২০ দিনের মধ্যে ঘুলজা শহরে ১২ জন উইঘুরের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে একজন ছিলেন ৬২ বছর বয়সী কৃষক মেওলান সিদ্দিক।

চীনের জিরো-কোভিড পলিসিটি গুলজা শহর সহ পূর্ব তুর্কীস্তানের বেশ কিছু জায়গায় উল্লেখযোগ্যভাবে খাদ্যের ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।

সেই কর্মকর্তাটি আরও জানান, মেওলান সিদ্দিক লকডাউন বাস্তবায়নের ১০ দিন পরই মারা যান। লকডাউনের কারণে গ্রাম ও শহরের কর্মকর্তারা সময়মতো তার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হতে পারেন নি এবং মেলওয়ানের কোনও আত্মীয়-স্বজনও এখন বেঁচে নেই।

তিনি বলেন, এই লকডাউনের সময় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে মেওলানও রয়েছেন। লকডাউনের প্রথম ২০ দিনের মধ্যে তারা সবাই অনাহারে এবং ওষুধের অভাবে মারা গেছে।

দ্বিতীয় এক কর্মকর্তা আরএফএকে বলেন, সিদ্দিক সম্ভবত মারা গেছেন লকডাউনের মধ্যে তার প্রয়োজনীয় ওষুধ সময়মতো পৌঁছায়নি বলে। সিদ্দিক অনেক আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন এবং লকডাউন শুরু হওয়ার পরে তা আরও গুরুতর হয়।

গুরকিরাতমা গ্রামের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আরএফএকে বলেন, খাদ্য সংকটের কারণে সম্প্রতি সেখানে দুইজন উইঘুর বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে এবং তিনজন উইঘুরকে অপুষ্টির কারণে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।

বিশেষজ্ঞগণ বলছেন জিরো কোভিড পলিসি বাস্তবায়নের মাধ্যমে উইঘুরদের কার্যত গৃহবন্দী করে রেখেছে দখলদার চীন সরকার। এবং এই গৃহবন্দীত্বের কারণে উইঘুররা এখন তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, খাবার ও ওষুধপত্র কিনতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার ফলে পূর্ব তুর্কীস্তানে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে।

উলামাগণ তাই বলছেন, পুরো মুসলিম বিশ্বের উচিত এখন উইঘুরদের সাহায্যে নিজেদের সামর্থ্য মতো এগিয়ে আসা। এবং চীনের সকল ধরণের পণ্য বয়কটের মাধ্যমে চীনকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে ফেলা ও সাধ্যমত তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।



তথ্যসূত্র:
——–
1. As many as a dozen dead amid shortages caused by Xinjiang COVID lockdown
– https://tinyurl.com/3cebn5ur

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনার ভারত সফরকালেই হত্যার শিকার স্কুলছাত্রের লাশ ৪ দিনেও ফেরত দেয়নি সন্ত্রাসী বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধইথিওপিয়ায় ফের আশ-শাবাবের হামলা : অফিসার সহ নিহত ১৫