দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর গত ২২ এপ্রিল মুসলিমদের পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। ঈদের সালাত আদায়ের জন্য মুসলিমরা ঈদগাহ কিংবা মসজিদে সমবেত হয়েছেন। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হল, ভারতের বেশ কিছু এলাকায় প্রশাসনের নানা কঠোরতার কারণে মুসলিমরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের সালাত খুশি মনে আদায় করতে পারেনি। ঈদের সালাত আদায়কারীদের নানা ভাবে হয়রানি করা হয়েছে।
বেগমপুরওয়া পুলিশ আউটপোস্টের অফিসার ইনচার্জ ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে জানিয়েছেন, ‘ঈদের দিন সকাল ৮টার দিকে নামাজের ঠিক আগে মুসল্লি বেশি হওয়ায় ঈদগাহ [মসজিদের] সামনের রাস্তায় ভিড় জমে যায়। ফলে সবাই সড়কে চাটাই বিছিয়ে নামাজ পড়া শুরু করেন। এতে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু মুসল্লিরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই নামাজ আদায় করেন।’
এভাবে উত্তর প্রদেশের কানপুরের তিনটি এলাকায় মসজিদের বাইরে রাস্তায় নামাজ পড়ার জন্য ১,৭০০ জনেরও বেশি মুসলিমের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাবু পুরওয়া এবং জাজমাউ থানায় দায়ের করা তিনটি এফআইআর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পিটিআই-এর মতে, সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর ওমবীর সিং বাজারিয়া থানায় একটি এফআইআর নিবন্ধন করে। এতে সেখানকার ১,৫০০ জন অজ্ঞাত মুসল্লি এবং একটি মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়। এর বাইরে, জাজমাউ থানায় প্রায় ২০০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, এবং বাবু পুরওয়া থানায় প্রায় ৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মুসল্লিদের বিরুদ্ধে ধারা 186 (কর্তব্য পালনে সরকারী কর্মচারীকে বাধা দেওয়া), 188 (সরকারি কর্মচারী কর্তৃক যথাযথভাবে প্রচারিত আদেশ অমান্য করা), 283 (জনসাধারণের পথে বাঁধা দেওয়া), 341 (অন্যায় আচরণের শাস্তি) এবং 353 (অপরাধমূলক কাজে বল প্রয়োগ) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে মুসল্লিদের আটক করতে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মুহাম্মদ সুলেমান বলেছেন, ‘লোকেরা মুসলমান হওয়ার কারণেই তাদের টার্গেট করা হচ্ছে। অন্যথায়, হিন্দুরা যখন রাস্তা বন্ধ করে মিছিল ও শোভাযাত্রা করে তখন তাদের কিছুই করা হয় না।’
তথ্যসূত্র:
——-
1. 1,700 Muslims booked for offering Eid namaz on roads in Kanpur
–https://tinyurl.com/2cnaaxhk