মালিতে জোড়া ইস্তেশহাদী অপারেশন: দেড় শতাধিক শত্রু হতাহত

2
215

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী ও কুফ্ফার বাহিনীর মাঝে পুরোদমে যুদ্ধ চলছে। সম্প্রতি দেশটির মোপ্তি রাজ্যে কুফ্ফার বাহিনীর একটি বিমান ঘাঁটি ও তার নিকটবর্তী একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে ২টি ইস্তেশহাদী অপারেশনসহ ইনগিমাসী অভিযান পরিচালনা করছেন আল-কায়দা সংশ্লিষ্ট মুজাহিদগণ। এতে শুধু রাশিয়ার ওয়াগনার বাহিনীরই অন্তত ২৫ সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও আরও অসংখ্য সৈন্য হতাহত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রমতে, গত ২২ এপ্রিল সকালে রাজ্যটির সেভারে শহরে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিগুলোতে একযোগে ইস্তেশহাদী হামলার পাশাপাশি দুঃসাহসিক ইনগিমাসী অপারেশন পরিচালনা করছেন মুজাহিদগণ।

আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনের (জেএনআইএম) ইস্তেশহাদী কমান্ডো মুজাহিদগণ বিস্ফোরক ভর্তি ৩টি গাড়ি নিয়ে বিমান ঘাঁটি ও নিকটস্থ সামরিক ঘাঁটিগুলোর উদ্দেশ্যে অগ্রসর হন। এর মধ্যে ২টি গাড়ি তাদের লক্ষ্যে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এতে বিমানঘাঁটি ও নিকটস্থ সামরিক ঘাঁটির বিশাল একটি অংশ ধ্বসে পড়ে। এরপর ঘাঁটির বাইরে অপেক্ষারত ইনগিমাসী মুজাহিদগণ ঘাঁটিগুলোতে ঢুকে পড়েন। ইনগিমাসী মুজাহিদদের এই অভিযান টানা ২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, টানা ২ ঘন্টার তীব্র এই অভিযানে রাশিয়ার ভাড়াটে ‘ওয়াগনার’ বাহিনীর অন্তত ২৫ সৈন্য নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও অনেক সৈন্য। এছাড়াও সামরিক ব্যারাকগুলোতে অবস্থান নেওয়া জাতিসংঘ ও মালিয়ান সামরিক বাহিনীরও আরও কমপক্ষে ১৫০ সৈন্য হতাহত হয়েছে। যদিও মালির জান্তা সরকার দাবী করেছে যে, এই অভিযানে মালিয়ান সামরিক বাহিনীর মাত্র ৩২ সৈন্য নিহত হয়েছে।

মোপ্তি রাজ্যের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের টুইটার থেকে জানানো হয়েছে যে, মুজাহিদদের এই অভিযানে হতাহত সেনাদের সংখ্যা এত বেশি যে, তাদের জন্য এখন হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে বেড এবং প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন।

আঞ্চলিক সূত্রগুলি জানিয়েছে যে, জেএনআইএম’র সফল এই আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য ছিল সামরিক ঘাঁটি এবং বিমানবন্দরে রাশিয়ান ওয়াগনার বাহিনীর বিমানগুলি। আর এই লক্ষ্য তারা অনেকটা সফল হয়েছেন।

জেএনআইএম’র অফিসিয়াল মিডিয়া সূত্রমতে, ইনগিমাসী মুজাহিদগণ এই অভিযানের মাধ্যমে প্রথম দিকেই রাশিয়ান বাহিনীর কয়েকডজন সৈন্যকে হত্যা করেছেন। সেখানে থাকা জাতিসংঘের কথিত শান্তিরক্ষী ও মালিয়ান সেনাদেরও হতাহত করেছেন মুজাহিদরা। একই সাথে মুজাহিদগণ ব্যারাকগুলোতে থাকা লজিস্টিক্যাল এবং সামরিক সরঞ্জামের গুদামঘরগুলোও ধ্বংস করে দিয়েছেন।

এই অভিযানে বিমানবন্দরে থাকা কতটি বিমান ধ্বংস হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় নি। কারণ, হামলার পর সামরিক ঘাঁটিতে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হলেও, বিমান ঘাঁটিতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, সেভারে সামরিক বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হওয়া মুজাহিদদের তৃতীয় গাড়িটি লক্ষ্য করে তুরষ্কের Bayraktar TB2 ড্রোন থেকে হামলা চালানো হয়।

স্থানীয় কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গাড়িটিকে দীর্ঘ সময় ধরে অনুসরণ করে ড্রোনটি। গাড়িটি যখন জনমানবশূন্য সড়ক অতিক্রম করছিল তখন এটিকে টার্গেট করা হয়নি। কিন্তু যখন গাড়িটি একটি বসতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই গাড়িটি লক্ষ্য করে ড্রোন থেকে হামলা চালানো হয়। ফলশ্রুতিতে ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

এরপর মিডিয়াগুলো সামরিক ঘাঁটিতে হতাহত সেনা সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতিকে আড়াল করে ঢালাওভাবে বসতিতে নিহত হওয়া বেসামরিক নাগরিকদের সংবাদটি প্রচার করতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, ড্রোন হামলার তথ্যটি গোপন করে তারা প্রচার করে যে, মুজাহিদগণ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছেন।

অপরদিকে প্রতিরোধ বাহিনীর অফিসিয়াল মিডিয়া সূত্র “আয-যাল্লাকা” নিশ্চিত করেছে যে, এই অভিযানের সময় জেএনআইএম’র ১৫ জন মুজাহিদও শাহাদাত বরণ করেছেন। পাশাপাশি, সেদিন মুজাহিদগণ মালিয়ান সামরিক কনভয়, একটি টহল দল ও জাতিসংঘের একটি ইউনিটকে টার্গেট করে পৃথক আরও ৩টি অভিযান পরিচালনা করেছেন।

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ কি ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়েই গেল?
পরবর্তী নিবন্ধরাস্তায় ঈদের নামাজ পড়ায় ভারতে ১,৭০০ মুসলিমের নামে মামলা