২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল সুদানের দু’টি সামরিক বাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রূপ নিয়েছে গৃহযুদ্ধে। এই গৃহযুদ্ধে সবচাইতে বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে দেশটির বেসামরিক মুসলিম জনগণকে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত মুহম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন “র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স” বা আরএসএফের হাতে সবচাইতে বেশি গণহত্যার শিকার হচ্ছেন জনগণ।
স্থানীয় সূত্রমতে, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) সুদানে সর্বশেষ গণহত্যাটি চালিয়েছে গত ৫ জুন, বুধবার। এদিন জাজিরা রাজ্যের পশ্চিমে ভাদ আন-নূরা গ্রাম ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে পরপর দুবার হামলা চালানো হয়। একই সাথে দারফুর রাজ্যের ফাশির শহরের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালায় দলটি। এতে অনেক বাড়িঘর ধ্বংস এবং বহু স্থানে ভারী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সূত্রমতে, এদিন মিলিশিয়া বাহিনীটির বর্বরোচিত এসব হামলায় ৩৫ শিশুসহ ২০০ জনেরও বেশী বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এই হামলায় আরও অনেক বেসামরিক লোক গুরুতর আহত হয়েছেন। আঞ্চলিক সূত্রগুলো এই হামলাকে “গণহত্যা” বলে বর্ণনা করেছে।
এদিকে স্থানীয় একটি গণতান্ত্রিক দল বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছে যে, হামলার সময় তারা সেনাবাহিনীর কাছে সাহায্যের অনুরোধ করেছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী তাদের এই অনুরোধে কোনো কর্ণপাত করেনি।
ফলে আমিরাত সমর্থিত মিলিশিয়া দলটি, এলাকাটিতে ভারী কামান ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে এবং বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে। আর গণহত্যা থেকে কোনরকমে বেঁচে যাওয়া বেসামরিক লোকজন এলাকা ছেড়ে নিকটবর্তী মানাজিল শহরে পালিয়ে যান। তখন মিলিশিয়া সদস্যরা এলাকাটিতে ভারী লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
অপরদিকে গণহত্যার পর এই হামলার নিন্দা জানায় লজ্জাজনকভাবে সাহায্যের অনুরোধে সাড়া না দেওয়া সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য যে, ক্রমবর্ধমান এই সংঘর্ষের ফলে সুদানে ক্ষুধা ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দেশের প্রায় ১৭.৭ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। এছাড়াও ৫ মিলিয়ন মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। আর এখন পর্যন্ত দেশটিতে গৃহযুদ্ধের ফলে কমপক্ষে ১৫ হাজার বেসামরিক লোক মারা গেছেন। গাজা গণহত্যার আড়ালে সুদানের গণহত্যার খবরাখবর অনেকটা ঢাকা পরে গেলেও, এই গণহত্যা ও গৃহযুদ্ধেও ইসরায়েলের হাট রয়েছে বলে অনেক গণমাধ্যমেই খবর হয়েছে।