করোনার তাণ্ডবে নাজেহাল বিশ্ব। আর সেই করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নামে কেন্দ্র সরকার ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপটি সবাইকে নিজের নিজের মোবাইলে ডাউনলোড করতে বলেছে। সরকারের বক্তব্য, এই অ্যাপের সাহায্যে করোনা সংক্রমণের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। কিন্তু আরোগ্য সেতু অ্যাপটি আমজনতার ‘দেহরক্ষী’ নাকি ‘গুপ্তচর’? এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক চলছে। যদিও সরকারের দাবি, রোগীর মোবাইলের তথ্যের ওপর নয়, করোনা সংক্রমণের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। মোবাইলে ব্লুটুথ ও জিপিএস চালু থাকায় কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির কাছাকাছি এলেই তা জানান দিচ্ছে এই অ্যাপটি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় রেড জোন ও কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকার বাসিন্দাদের মোবাইলে এই অ্যাপটির ইনস্টল করা বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি দপ্তরের সমস্ত কর্মীকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে সচল রাখতে হবে। যদি কোনও কর্মীর মোবাইলে ওই অ্যাপ না থাকে, তা হলে তার দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাকে। যেখানে সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, এই অ্যাপের মাধ্যমে আমজনতার গোপনীয় তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ করছেন বিরোধীরা।
অ্যাপটির উদ্ভোদনের পর ভারতে ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশনসহ একাধিক সংস্থা এর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ ছাড়া কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইট অ্যাপ নিয়ে বলেন- একটি ‘সফিস্টিকেটেড সার্ভেইলেন্স সিস্টেম’, যা বেসরকারি সংস্থার কাছে আউটসোর্স করে দেওয়া হয়েছে। মহামারির ভয় দেখিয়ে নাগরিকদের সম্মতি ছাড়াই তাদের ওপর এখানে নজরদারি চালানো হচ্ছে, ট্র্যাক করা হচ্ছে।
রাহুলের অভিযোগ, ‘এই অ্যাপের বরাত দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে। এতে কোনও সরকারি নজরদারি নেই। ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’ একই অভিযোগ তুলেছেন মিম দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েসীসহ বহু বিরোধী নেতা। যদিও মোদি সরকার সে সবে কর্ণপাত করতে নারাজ।