গ্যাসের লাইন দিতে দালালকে দিতে হয় ৩০ হাজার টাকা!

1
560
গ্যাসের লাইন দিতে দালালকে দিতে হয় ৩০ হাজার টাকা!

‘গ্যাস লাইনের সংযোগ নিতে হলে দালালদের ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে গ্যাস লাইন নেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের টাকা দিয়ে গ্যাস সংযোগ নিতে হচ্ছে’। কথাগুলো বললেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ আটি এলাকার একটি ভবনের জনৈক কেয়ারটেকার। তিনি বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরের আত্মীয় শাহরিয়ার তপন ও মোস্তফা মিয়া নামে দুই ব্যক্তি অবৈধভাবে শতাধিক গ্যাস সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ওই কেয়ারটেকার বলেন, কেউ যদি এ ঘটনা জানায় তাহলে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাবে কাউন্সিলরের লোকেরা।

সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অধীনে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তার পাশ দিয়ে গ্যাস লাইন থেকে রাতের আঁধারে চুরি করে অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এ অবৈধ সংযোগের সাথে জড়িত রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসানের খালাতো ভাই শাহরিয়ার তপন ও কাউন্সিলরের সহযোগী মোস্তফা মিয়াসহ একটি সিন্ডিকেট। খবর নিয়ে জানা যায়, তিতাস গ্যাসের কোনো কর্মকর্তাকে না জানিয়ে তারা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, হাউজিং এলাকায় ভবন নির্মাণ করার সামগ্রী (ইট, বালু, সিমেন্ট, রড)-সহ সকল সামগ্রী ওই সিন্ডিকেটের কাছ থেকে নিতে হবে; বাধ্যতামূলক।

এলাকাবাসী জানায়, গত দুই মাস ধরে হাউজিং এলাকায় প্রায় ৪/৫টি সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। রাস্তার পাশে গ্যাস লাইন থেকে বিভিন্ন বাড়ি মালিক তাদের জমিতে গ্যাস সংযোগ নেওয়ার জন্য তপন ও মোস্তফাকে প্রতিসংযোগে ২৫ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা দিতে হচ্ছে। প্রায় শতাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। আর সংযোগ না নিলে পরে সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তা কেটে গ্যাসের সংযোগ নিতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানান তারা। এই ভয়েই সবাই তড়িঘড়ি করে তপন ও মোস্তফার ফাঁদে পা দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিচ্ছেন।

হাউজিং এলাকার একজন ভাড়াটিয়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হাউজিং এলাকায় কোনো জমি বিক্রি হলে তপন ও মোস্তফা সিন্টিকেটকে দিতে হয় ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা। জমির দাম যাই হোক জায়গা রেজিস্ট্রি হওয়ার আগেই এই বাহিনীর হিসাব আগে চুকাতে হবে- না হয় জমি রেজিস্ট্রি হবে না। তিনি বলেন, এই বাহিনীর কাছে এলাকাবাসী অসহায়।

হাউজিং এলাকার এক বাড়িওয়ালা জানান, রাস্তা ১৬ ফুট প্রশস্ত করার কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে রাস্তা সাড়ে ১৫ ফুট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একাধারে ৪/৫ রাস্তা কেটে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তারা রাস্তাগুলো কেটে ফেলে রেখেছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার তপন ও মোস্তফা মিয়া কালের কণ্ঠকে জানান, আমরা যা করছি তিতাস গ্যাসের লোকদের সাথে সমন্বয় করে করছি। ইট, বালি, সিমেন্টসহ সকল নির্মাণসাসগ্রী তাদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এসকল নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসা করি এ কথা সত্য। তবে আমাদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে মালামাল নিতে হবে এ কথা সত্য নয়।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাকে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠালেও তিনি কোনো প্রতি-উত্তর করেননি।

তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জের ডেপুটি জেনারেল ম্যানাজার ফয়জুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, হাউজিং আটি এলাকায় কে বা কারা গ্যাসের লাইন বসাচ্ছে বিষয়টি আমাদের জানা নেই। গ্যাস কম্পানির পাইপ থেকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। যে সকল দালালরা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। কালের কন্ঠ

১টি মন্তব্য

  1. ভাই আমাদের এলাকায় এক লোকের গরু ছিল ছাত্রলীগের লোকজন গোয়াল থেকে গরু নিয়ে যায় গরুর মালিক যখন থানায় পুলিশের কাছে বিষয়টা জানাইছে তখন থানার পুলিশ ছাত্রলীগের ওই নেতাকে ফোন করছে যে মামলা করতে আসছে তোমার নামে মামলা কি নিব এরপরে কি হলো এক মর্মান্তিক ঘটনা মামলা তো পুলিশ নিলিনা এবং গরুর মালিক যখন বাড়িতে আসলো তখন তার হাত-পা সব কিছু ভেঙে দিল ছাত্রলীগ নেতা এবং সেই লোক কিছুদিন পরে মারা গেল বিষয়টা কত সিরিয়াস দেখেন আমার বড় নিল আবার আমি থানায় গেলাম কেন এজন্য আমাকে মেরে হাত-পা ভেঙে দিল এরপর এগুলোর কোনো বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি এটা হল ডিজিটাল বাংলাদেশ

Leave a Reply to Masudur Rahman প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধএ বছরো কোরবানির চামড়ার বাজারে বিপর্যয়!
পরবর্তী নিবন্ধনিউইয়র্কে গুলিবিদ্ধ হয়েই মৃত্যু বেড়েছে ১৭৬ শতাংশ