বিদ্রোহী শিয়া নেতা মাহদির শক্ত ঘাঁটি বলখাবের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ তালিবানের

0
1459

আফগানিস্তানের সারাইপুল প্রদেশে বিদ্রোহীদের ধরতে ক্লিয়ারিং অপারেশন পরিচালনা করছেন দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইতিমধ্যে প্রদেশটিতে বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি বলখাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে প্রতিরক্ষা বাহিনী।

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, “কিছুদিন আগে দেশটির প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনী সারাভপুল প্রদেশের বলখাব জেলায় বিদ্রোহীদের দমন করতে একটি যৌথ ক্লিয়ারিং অপারেশন শুরু করেছিল। মহান আল্লাহ তাআ’লার সাহায্যে ইমারাতে ইসলামিয়ার মুজাহিদগণ গত ২৫ জুন সকালে বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি ও বলখাব জেলার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেন। এই অপারেশন চলাকালীন ইমারাতে ইসলামিয়ার কোন মুজাহিদ হতাহত হননি। কেননা বিদ্রোহীরা কোন প্রতিরোধ ছাড়াই পালিয়ে যায়।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, “মুজাহিদদের পরিচালিত হামলার পর জেলাটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে পালিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে লুকিয়ে থাকা বিদ্রোহীদের ধরতে এবং এলাকাগুলো নিরাপদ রাখতে সেখানেও অভিযানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।”

উল্লেখ্য যে, এই অপারেশনটি হাজারা জাতিগোষ্ঠীর শিয়া নেতা মাহদি ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিচালনা করছেন মুজাহিদগণ। এই বিদ্রোহী নেতা পূর্বে ইমারাতে ইসলামিয়ার সমস্ত নির্দেশনা মনে চলার আনুগত্য করে। ফলে হাজারা জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে এবং বিদ্রোহ দমন করে রাখতে তাকে বলখাবের অলি এবং বামিয়ানের গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

হাজারা নেতা মাহদি:

কিন্তু এই সময়টাতে তার বেশ কিছু সন্দেহজনক কার্যকলাপ নজরে পড়ে তালিবান প্রশাসনের। যার মধ্যে রয়েছে-

১- ইমারাতে ইসলামিয়ার পক্ষ থেকে নিযুক্ত দায়িত্বশীলদেরকে তাদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ।

২- অধিক পরিমাণে হাজারা শিয়াদেরকে প্রশাসনিক কাজে যুক্তকরণ।

৩- ইমারাতের উচ্চপর্যায়ে পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

৪- নিজস্ব বাহিনী গঠন; যে বাহিনীতে কুখ্যাত ফাতেমি এবং অন্যান্য শিয়াদের সংগঠিত করছিল সে। (অথচ তখন অঞ্চলটিতে পৃথক কমান্ডারের অধীনে ইমারাতের সামরিক বাহিনী উপস্থিত রয়েছে।)

এছাড়াও আরও বেশ কিছু সন্দেহজনক কর্মকান্ডের কারণে ইমারাতে ইসলামিয়া প্রশাসন তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে। সরকার কর্তৃক এই অপসারণের পর ঐ মাহদি এবং তার সদস্যরা সংখ্যালঘু হাজারা শিয়া অধ্যুষিত বালখাব জেলায় নিজেদেরকে শক্তিশালী করে এবং ইমারাতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে শুরু করে। সেই সাথে গণহারে ইমারাতে ইসলামিয়ার নিযুক্ত কর্মকর্তাদের বলখাব থেকে বহিষ্কার করে।

তার এসব কর্যকলাপের পরেও ইমারাতের পক্ষ থেকে প্রথমেই কোন সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং সমস্যাগুলো সমাধান করতে তাকে বুঝানোর জন্য ইমারাতের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার সাথে আলোচনা করেন। এবং বেশ কিছু প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে ইমারাতের প্রতি তার আনুগত্যকে নবায়ন করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন।

কিন্তু বিদ্রোহী মাহদিকে বুঝিয়ে সমস্যার কোন প্রতিকার হয়নি। ফলে তালিবান দুই সপ্তাহের দীর্ঘ আলোচনার পর তার বিরুদ্ধে সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেন। এবং তার বাসভবন সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো অবরোধ করেন মুজাহিদগণ।


প্রতিবেদক :  আলী হাসনাত


তথ্যসূত্র :

  1. د سرپل ولایت په بلخاب کې د ګډو چاڼیزو عملیاتو تر سره کول

    https://tinyurl.com/5n8kyjea

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকথিত জাতিসংঘের সামরিক কনভয়ে আবারো আল-কায়েদার হামলা: হতাহত ৮ শত্রুসেনা
পরবর্তী নিবন্ধহিন্দুত্ববাদীদের হামলা-মামলায় যেমন আছেন ভারতীয় মুসলিমরা