ইসলামি অনুশাসন ব্যতিত মানব রচিত আইনের মাধ্যমে যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়- এটি আবারও প্রমাণ হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই মহাপরিচালক (ডিজি)-কে বদলি করা হয়েছে। আর তাদেরকে বদলি করার পরপরই একে একে উঠে আসছে তাদের দুর্নীতির ফিরিস্তি। তারা হলেন, অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এবং যুগ্ম সচিব একেএম সোহেল। এদের মধ্যে সাঈদ মাহবুব খান প্রায় ৫ বছর ধরে দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান-তদন্ত) পদে কর্মরত রয়েছেন। আর একেএম সোহেল ৪ বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত রয়েছেন দুদক মহাপরিচালক (আইসিটি ও প্রশিক্ষণ) হিসেবে।
প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, বৃহৎ দুর্নীতির দায় থেকে প্রভাবশালীদের দায়মুক্তি প্রদান, স্বজনপ্রীতিসহ উঠে আসে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ। কমিশনের বিগত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের ‘পছন্দের লোক’ হিসেবে পরিচিত এই দুই কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটিকে নানাভাবে বিতর্কিত করেন।
বিশেষ অনুসন্ধান তদন্তের দায়িত্বে থাকা মহা-পরিচালক সাঈদ মাহবুব খানের বিরুদ্ধে রয়েছে কমিশনকে ‘মিস গাইড’ করা, স্বেচ্ছাচারিতা এবং প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের দায়মুক্তি প্রদানের অভিযোগ। দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা, গণপূর্তের প্রকৌশলী, স্বাস্থ্যখাতের মাফিয়া ডন, রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এবং প্রশাসন ক্যাডারকে দায়মুক্তি প্রদানেও ভূমিকা রাখেন।
পছন্দসই কর্মকর্তাদের নামে গুরুত্বপূর্ণ তদন্তের ফাইল এনডোর্স করা, পাবলিক মানি আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত না করে, আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ ফেরত দেয়ার মাধ্যমেও অনেককে দায়মুক্তির ব্যবস্থা করেন সাঈদ।
এমনকি ইকবাল মাহমুদের ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থ করতে বহু নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে শক্ত ভূমিকা পালন করেন তিনি। মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সাঈদ মাহবুব খান বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন কিনা সেটিও এখন অনুসন্ধানের দাবি রাখে বলে মনে করেন দুদকের একাধিক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, একেএম সোহেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটি (যাবাক)র বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ক্ষমতা অপব্যবহার, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে অফিসের গাড়ি ব্যবহার, এবং নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সুপারিশ করে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে সোহেলের বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রভাবশালী অনেক দুর্নীতিবাজকে কোনো ধরনের অসুন্ধান ছাড়াই বাছাই পর্যায় থেকে দায়মুক্তি দিয়ে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। অকাট্য প্রমাণাদিসহ দুর্নীতির অন্তত ৯৫ ভাগ অভিযোগ অনুসন্ধানে না পাঠিয়ে সরাসরি দায়মুক্তি প্রদান কিংবা অভিযোগ গায়েব করে দেয়ার বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নামে দুর্নীতি দমন কমিশন হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তারাই দুর্নীতির সাতে জড়িত। ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আদলে গড়ে উঠা এ দেশের শাসন ব্যবস্থায়ও গুটিকয়েক মানুষ সর্বসাধারণকে নিয়ন্ত্রণ করছে। পাশাপাশি কথিত উন্নয়নের গোলক ধাঁধায় ফেলে জনগণের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে৷ ফলশ্রুতিতে জনসাধারণ রাত দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও নিজেদের অভাব ঘোচাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই এই জুলুমের সিস্টেম পশ্চিমা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাত করে দুর্নীতি মুক্ত ইসলামি শরিয়াত ভিত্তিক সমাজ গঠন এখন সময়ের দাবি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
লিখেছেন : ইউসুফ আল-হাসান
তথ্যসূত্র:
১। কী মধু দুদকে?
– https://tinyurl.com/yck5hn8t
আমাদের সুলতান এরদোগান🌐🌐🌐🌐
চার বছর পর তুরস্কে নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে ইসরায়েল।
https://m.dailyinqilab.com/article/519943/%E0%A7%AA-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B2