কর্ণাটকের গদাগ জেলার একটি সরকারি স্কুলের মুসলিম অধ্যক্ষকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শ্রী রাম সেনের সদস্যরা হেনস্থা করে। কারণ তিনি প্রিয়নবী মুহাম্মদ (ﷺ)-এর জীবনীর উপর একটি রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন।
শুধু হেনস্থা করেই শেষ নয়, হিন্দুত্ববাদী উগ্র সংগঠনটি দাবি করেছে, নাগাভি গ্রামের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুল মুনাফর বিজাপুরকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে ছাত্রদের ধর্ম পরিবর্তনের অভিযোগ তুলেছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে শ্রী রাম সেনের এক নেতা বলেছে, “এটি নাকি তরুণদের মধ্যে ইসলাম প্রচারের একটি প্রচেষ্টা ছিল।”
এই সামান্য বিষয় নিয়ে হেনেস্থা করতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মুসলিম অধ্যক্ষকে সরকারি আদেশ দেখাতে বলে। অথচ, তিনি বলেন “এই ধরনের প্রতিযোগিতা পরিচালনা করার জন্য কোন সরকারী বিজ্ঞপ্তি থাকে না। আমরা আগেও বিভিন্ন উপলক্ষ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। কিন্তু এবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-কে নিয়ে করায় হিন্দুত্ববাদীরা আমার উপর ক্ষেপেছে।”
অধ্যক্ষ বলেছেন, “ছাত্রদের মধ্যে হাতের লেখার উন্নতির জন্য আমরা একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে একটি রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। প্রতিযোগিতায় প্রায় ৪৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষণীয় বই তুলে দিয়েছি।”
অথচ বিপরীতদিকে স্কুলের হিন্দু-মুসলিম সকল শিক্ষার্থীকে হিন্দুদের ভগবানের ভজন গাওয়ানো হলে কিংবা সরকারি নির্দেশে সকল ছাত্রকে সূর্যপূজায় শরীক হতে বললে তাতে কেউ কোন সমস্যা বোধ করে না; কথিত সেকুলার মহলও তখন মুখ খুলে না। সমস্যা শুধু নবীজি (ﷺ)-এর জীবনী নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে; সমস্যা শুধু ইসলামের কথা বললে। বাংলাদেশের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশে পর্যন্ত মুসলিম শিশুদেরকে ‘হরে রামা হরে কৃষ্ণা’ বলে প্রসাদ খাওয়ানোর ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে হিন্দুরা। আর হিন্দুত্ববাদী ভারতে তো তাদের দাপট সীমাহীন।
উপমহাদেশের মুসলিমরা অনেকটা এখন হিন্দুদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। মুসলিমরা কি খেতে পারবে কি পারবেনা, কি পরতে পারবে কি পারবে না, কোথায় ইবাদত করতে পারবে কোথায় পারবে না, প্রিয়নবী (ﷺ)-এর জীবনী নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারবে কি পারবে না – সবই এখন হিন্দুত্ববাদীরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। মুসলিমদেরকে তাই চুপ না থেকে হিন্দুদের এসব অনধিকার চর্চা এবং বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে বলেছেন ইসলামি বিশ্লেষকরা। আর ভবিষ্যতের অনিবার্য সংঘাত মোকাবেলার প্রস্তুতিও নিতে বলেছেন তাঁরা।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Karnataka: School principal heckled for conducting essay competition on Prophet Muhammad (Scroll)
– https://tinyurl.com/2p8vts7k