গত আগস্টে মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে নতুন করে ২৫ লাখ অ-কাশ্মীরি ভোটার যুক্ত করার ঘোষণা দেয় দখলদার হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। এরপর ইতোমধ্যেই সেখানে ৭ লাখ ৭২ হাজার ভোটার যুক্ত করেছে দখলদার হিন্দুত্ববাদীরা; এটি কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন কেঁড়ে নিয়ে তা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
পূর্বে কাশ্মীরে মোট ভোটার সংখ্যা ছিলো ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৯ জন, যা এখন ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৭১ জনে।
২০১৯ এর আগে হিন্দুত্ববাদী ভারতের দখলকৃত কাশ্মীরে ভোটদানের অধিকার শুধুমাত্র কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দাদের অর্থাৎ মুসলিমদের জন্যই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী বিজেপি ২০১৯ সালে কাশ্মীরের নামকাওয়াস্তে স্বায়ত্বশাসনের মর্যাদাটুকুও কেঁড়ে নিলে, উগ্র হিন্দুরা সেখানে অবৈধ বসতি গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে। আর তাদের এই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিতে সন্ত্রাসী বিজেপি কাশ্মীরে নতুন করে ভোটাধিকার বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়।
কাশ্মীরকে জম্মুর মতো মুসলিম সংখ্যালঘু করতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি। কাশ্মীরে নতুন ভোটার যুক্ত করা হলো সেই প্রকল্পরই একটি অংশ।
পূর্বে অ-কাশ্মীরি হিন্দুদের জন্য কাশ্মীরে বসতি গড়া, সেখানে চাকরী করা, জমি কেনা ইত্যাদি বিষয় নিষিদ্ধ ছিল। তবে ভোটাধিকার পাবার মাধ্যমে উগ্র হিন্দুরা এখন সেখানে বসতি স্থাপন করতে পারবে। এছাড়া কাশ্মীরে চাকরী করা ও জমি কেনার ক্ষেত্রেও তারা পাবে বিশেষ ছাড়।
একদিকে আসামে মুসলিমদের নাগরিকত্ব বাতিল এবং অন্যদিকে কাশ্মীরে নতুন করে হিন্দু ভোটার বৃদ্ধি- গোটা হিন্দুস্তানেই হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর হয়ে আছে হিন্দুত্ববাদীরা। আর পুরো বিশ্ববাসী, বিশেষ করে ‘মানবতার ফেরিওয়ালারা’ দর্শকের মতো হিন্দুত্ববাদীদের এই ক্রমাগত অপরাধ দেখছে।
সুতরাং, কাশ্মীরি মুসলিমদের উচিত কথিত এই মানবতার ফেরিওয়ালাদের আশায় বসে না থেকে নিজেদেরই এই দখলদার হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এবং যার যার অবস্থান থেকে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
লেখক : ওবায়দুল ইসলাম
তথ্যসূত্রঃ
——–
১। 7.72 Lakh Voters Added in J&K in Highest Increase in Electoral Rolls
– https://tinyurl.com/ywnceadp