মালি সংলগ্ন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জেএনআইএম সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটির সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে চালানো অভিযানের গতি ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আঞ্চলিক সংবাদ মাধ্যম আয-যাল্লাকা। সম্প্রতি দেশটিতে জেএনআইএম প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পৃথক অভিযানে অন্তত ৬৩ বুরকিনান সেনা সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ধারাবাহিক অভিযান বৃদ্ধির অংশ হিসেবে, দলটির প্রতিরোধ যোদ্ধারা গত ১৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে পর্যন্ত দেশটির জান্তা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অন্তত ২৩ টি সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেছেন।
– গত ১৮ এপ্রিল দেশটির বেতু অঞ্চলের জিকাজি শহরে অবস্থিত বুরকিনান সরকারি মিলিশিয়াদের সদর দফতরে অভিযান চালান জামাত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এই অভিযানে মিলিশিয়া বাহিনীর অন্তত ২০ সেনা নিহত হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। অভিযান শেষে সদর দফতরটি থেকে ১,৩৭৫,০০০ ফরাসি ডলার উদ্ধার করেন জেএনআইএম যোদ্ধারা।
– ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জেএনআইএম’ যোদ্ধারা দেশটির ওগারো অঞ্চলের ফাদা-মাসাকোলি এলাকায় জান্তা প্রশাসনের একটি সামরিক ব্যারাক ঘিরে তীব্র অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় যুদ্ধক্ষেত্রেই ২১ বুরকিনান সেনা নিহত হয় এবং বাকিরা সামরিক ব্যারাক ছেড়ে পালিয়ে যায়।
– ৩ মে বুধবার, ‘জেএনআইএম’ যোদ্ধারা ফাদা অঞ্চলের ইয়াম্বা এলাকায় আরও একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানটি জান্তা বাহিনীর একটি সামরিক ইউনিটকে টার্গেট করে চালানো হয়েছিল। এতে বুরকিনার জান্তা বাহিনীর অন্তত ৭ সৈন্য নিহত এবং আরও অনেক সৈন্য আহত হয়েছে।
– এরপর গত ১২ মে দুপুরে ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ফাবুরি অঞ্চলের কেয়া এলাকায় আরও একটি অভিযান পরিচালনা করেন, যেটি বুরকিনান সেনাবাহিনীর একটি টহলরত দলকে টার্গেট করে চালানো হয়েছিল। আর তাতে ৫ বুরকিনান সৈন্য নিহত হয়।
– ১৮ মে বৃহস্পতিবার সকালে ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিন ওয়াহিগোয়া অঞ্চলের নুঙ্গাফিরি এলাকায় আরও একটি অভিযান পরিচালনা করেন। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের এই অভিযানের টার্গেটে পরিণত হয় উক্ত এলাকায় অবস্থিত জান্তা সরকারি মিলিশিয়াদের সদর দফতর। হামলায় সদর দফতরটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০ সৈন্য নিহত হয়, বাকিরা দফতর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মুজাহিদদের ছোট-বড় বাকি ১৮ টি অভিযানে আরও কয়েক ডজন বুরকিনান সেনা হতাহত হয়েছে, যার কিছু অফিসিয়ালি নিশ্চিতও করেছে আল-কায়েদা।
এছাড়াও, অফিসিয়াল বিবৃতি অনুযায়ী ‘জেএনআইএম’ যোদ্ধারা এসকল অভিযান শেষে শত্রু বাহিনীর ১১টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করার পাশাপাশি উদ্ধার করেছেন ৯টি দুশকা, ১৮টি সাঁজোয়া যান ও গাড়ি, ৭৩টি মোটরসাইকেল, ৩৭টি পিকা, ১১টি এয়ারবিকা, ৩৯টি আরপিজি, ৮৯টি কালাশনিকভ, ২৬টি রকেট লঞ্চার এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ ভর্তি ৩২৩টি বাক্স সহ অসংখ্য সামরিক সরঞ্জাম।
এভাবে সেনাবাহিনীর স্থাপনা ও যুদ্ধাস্ত্র ধ্বংস ও কব্জা করে একদিকে জেএনআইএম মুজাহিদগণ সেনা-সরকারকে দুর্বল করছেন, অপরদিকে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধির মাধ্যমে অত্র অঞ্চলে ইসলামি শাসনের ভিত্তি রচনা করছেন।