দেশ ও জনগণের উপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমিয়ে আনতে ইমারতে ইসলামিয়া সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতির সংকটময় মুহূর্তেও জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে এই ইমারত প্রতিশ্রুতিতে অবিচল রয়েছে।
দুর্যোগের প্রভাব কমাতে ইমারতে ইসলামিয়ার অন্যতম কৌশল হল দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি ও সাড়াদান পরিকল্পনা। আফগানিস্তান একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাম্প্রতিক সময়ে ঘন ঘন বৃষ্টিপাত ও বন্যার ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গুরুত্ব অনুভব করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য নিবেদিত সংস্থা ও কমিটি প্রতিষ্ঠা করেছে ইমারতে ইসলামিয়া সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকি মূল্যায়ন, ব্যাপকভাবে দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি ও জনসচেতনতা তৈরি করতে সংস্থাসমূহ কাজ করে যাচ্ছে।
দুর্যোগের প্রভাব মোকাবেলা করতে নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসমূহ আরও জোরদার করতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে সরকার। শক্তিশালী দালান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, মজবুত ব্রীজ ও রাস্তা নির্মাণ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রদানের মাধ্যমে জনগণকে সতর্ক করতে প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছে সরকার।
ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনশক্তির উপর জোর দিচ্ছে ইমারতে ইসলামিয়া। এই উদ্দেশ্যে তারা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত করছে। যেন জরুরি পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান বা ত্রাণ সরবরাহ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা ও তা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে নাগরিকদের প্রস্তুত রাখছে সরকার। যেন তারা ধৈর্যশীল ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজেরাই উদ্যোগী হতে পারে।
একটি টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে একাধিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে ইমারতে ইসলামিয়া। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উদ্যোগ হল বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে বনায়ন, বন উজাড় নিয়ন্ত্রণ, মাটির ক্ষয় রোধ করতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা, পানি ব্যবস্থাপনা কৌশল ইত্যাদি। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের মাধ্যমে দুর্যোগের তীব্রতা হ্রাস ও এর পুনরাবৃত্তি কমিয়ে আনতে কাজ করছে প্রশাসন। এভাবে পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণগুলো মোকাবেলার চেষ্টা করছে তারা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আওতায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে ইমারতে ইসলামিয়া। স্থানীয় সম্প্রদায়ের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিচ্ছে সরকার। কেননা এতে তাদের দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয়তা গুলো সনাক্ত করা যায়। গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ভিত্তিক আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, দুর্যোগের ঝুঁকি মূল্যায়ন পরিচালনা ও স্থানীয় প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে আনতে কার্যক্রম বাস্তবায়ন। দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারী সংস্থা, নাগরিক সমাজ সংস্থা, বেসরকারি খাত ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় গড়ে তোলা নিশ্চিত করছে সরকার। ফলে সীমিত অবলম্বন থেকে সর্বোচ্চ উপকার লাভ সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে আফগানিস্তানের সামাজিক বন্ধন আরও মজবুত হচ্ছে।
অসংখ্য বাঁধা-বিপত্তি সত্ত্বেও দুর্যোগের প্রভাব কমাতে গত তিন বছরে ইমারতে ইসলামিয়া সরকারের প্রচেষ্টার মাঝে তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে। দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি, সাড়াদান, উদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রচেষ্টায় অব্যাহত বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠনের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি আরও দৃশ্যমান পর্যায়ে কমে আসবে ইনশাআল্লাহ।
তথ্যসূত্র:
1. Mitigating Disaster: The Islamic Emirate’s Efforts in Afghanistan
– https://tinyurl.com/4zxj4e22
===================