
আল-কায়েদা পূর্ব আফ্রিকা ভিত্তিক সামরিক শাখা হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন সোমালিয়ায় পশ্চিমা সমর্থিত মোগাদিশু বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত অপারেশন অব্যাহত রেখেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার মুজাহিদদের সমন্বিত কয়েকটি অভিযানে মোগাদিশু সরকারি বাহিনীর অন্তত ৬৩ সেনা নিহত এবং আরও ৯০ এরও বেশি সৈন্য আহত হয়েছে।
হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসনের সামরিক নেতৃত্ব রবিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে যে, মুজাহিদিনরা গত ১৫ মার্চ শনিবার, মোগাদিশু বাহিনী থেকে একাধিক এলাকা ও সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এসময় মুজাহিদদের হামলায় মোগাদিশু বাহিনীর অন্তত ১৫৩ সেনা হতাহত হয়েছে।
এদিন মুজাহিদদের বিজিত এলাকার মধ্যে রয়েছে নিন্ম শাবেলি রাজ্যের আওদাগলি শহর, শহরের সামরিক ঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থান। শনিবার সকালে শহরটিতে মুজাহিদদের পরিচালিত অভিযানে মোগাদিশু বাহিনীর শীর্ষ সামরিক অফিসার সহ অন্তত ৩১ শত্রু সেনা নিহত এবং ৩৬ সেনা আহত হয়েছে। অভিযান শেষে মুজাহিদিনরা প্রচুর সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেন এবং বেশ কয়েকজন পরাজিত শত্রু সৈন্যকে বন্দী করেন।
শহরটি বিজয়ের পর মুজাহিদিনরা রাজধানী মোগাদিশু’র নিকটতম “লাফোলি” এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন এবং এলাকায় সামরিক চৌকি স্থাপন করেন। এসময় এই এলাকায় মোগাদিশু বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির জন্য আসা একটি কনভয়কে টার্গেট করে অতর্কিত আক্রমণ চালান মুজাহিদিনরা। অতর্কিত এই আক্রমণে ৩ সেনা নিহত এবং আরও ৪ সেনা আহত হয়। অন্য সৈন্যরা সামরিক কনভয় নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। তবে এসময় মুজাহিদদের বোমা হামলায় মোগাদিশু বাহিনীর একটি সামরিক পিকআপ ট্রাক ধ্বংস হয়ে যায়। একই দিন বিকেলে উক্ত এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো সেনা পাঠায় মোগাদিশু বাহিনী, এসময় মুজাহিদদের আক্রমণে মোগাদিশু বাহিনীর একটি বিএমপি সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়ে যায়, এতে কতক সৈন্য হতাহত হয়, অন্য সৈন্যরা জীবন বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
অপরদিকে মুজাহিদিনরা এদিন মধ্য শাবেলী রাজ্যের আধলি জেলার অন্তর্গত সুমাধালে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন। এলাকাটিতে মুজাহিদদের অগ্রযাত্রা রুখতে মোগাদিশু থেকে শক্তিবৃদ্ধির লক্ষ্যে একদল মিলিশিয়াকে পাঠানো হয়। মুজাহিদিনরা এই দলটিকে ধ্বংস করতে ভারী অস্ত্র দ্বারা তীব্র আক্রমণ চালান, ফলে এলাকায় উভয় বাহিনীর মাঝে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়। কিন্তু মোগাদিশু বাহিনী দীর্ঘক্ষণ মুজাহিদদের তীব্র আক্রমণের মুখে টিকে থাকতে পারেনি। এলাকাটিতে মুজাহিদদের দুর্দান্ত ও বীরত্বপূর্ণ অভিযানে মোগাদিশু বাহিনীর অন্তত ২৩ সৈন্য নিহত হয়, যাদের মধ্যে ১০ সেনার মৃতদেহ ময়দানে ফেলে রেখেই পালিয়ে যায় মোগাদিশু বাহিনী। এছাড়াও এই যুদ্ধে অর্ধশতাধিক শত্রু সৈন্য আহত হয়েছে। পরে আহত এই সেনা সদস্যদের মধ্যে ৪৩ জনকে সংঘর্ষস্থল থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত “হাজ্জি আলী” এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, অন্য আহত সেনাদের অবস্থা অজানা থেকে গেছে। এদিকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় শত্রুদের ফেলে যাওয়া অসংখ্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুজাহিদিনরা গনিমত হিসাবে অর্জন করেছেন।
একই সময় হারাকাতুশ শাবাবের অন্য একটি মুজাহিদ দল “আধলি” জেলার “লাগব্রাস” এলাকার দিকে অগ্রসর হন। এসময় উক্ত এলাকায় অবস্থান নেওয়া মোগাদিশু বাহিনীর বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধে লিপ্ত হন মুজাহিদিনরা। এলাকাটিতে মুজাহিদিনরা যখন শত্রু বাহিনীর মুখোমুখি হন, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই এলাকায় তাদের প্রশিক্ষিত দানব ফোর্সকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে বিমান হামলার মাধ্যমে সহায়তা করে। তথাপি মোগাদিশু বাহিনী এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারেনি। বরং ৭ সেনার মৃতদেহ এবং ৪ আহত সেনাকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধ শেষে মুজাহিদিনরা দুশকা মেশিনগান দ্বারা সজ্জিত একটি সামরিক পিকআপ ট্রাক সহ অসংখ্য অস্ত্র গনিমত হিসাবে জব্দ করেছেন।
মুজাহিদদের বিজিত নিন্ম শাবেলি রাজ্যের আওদাগলি শহরের সামরিক ঘাঁটির কিছু দৃশ্য-
তথ্যসূত্র:
١. القيادة العسكرية لحركة الشباب المجاهدين تعلن السيطرة على مناطق جديدة وتؤكد مقتل وإصابة أكثر من 150 من الميليشيات الحكومية
– https://tinyurl.com/43xe5vp4