ভারত একটা চলমান অর্থনৈতিক মন্দার সাথে লড়ছে। সন্ত্রাসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান একটি গবেষণা পত্রে এটাকে ‘মহা মন্দা’ আখ্যা দিয়েছে।
নরেন্দ্র মোদির প্রথম মেয়াদে ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের পর এখন সে এখন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলে শিক্ষকতা করছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টে উপস্থাপিত একটি খসড়া ওয়ার্কিং পেপারে সুব্রামানিয়ান বলেছে, “স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এটা কোন সাধারণ মন্দা নয়। এটা ভারতের মহা মন্দা, যেখানে অর্থনীতি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে”।
সে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফাণ্ডের ভারত অফিসের সাবেক প্রধান জন ফেলম্যানের সাথে যৌথভাবে এই নিবন্ধটি লিখেছে।
সুব্রামানিয়ান বলেছেন, ভারতের অর্থনীতি এখন জোড়া ব্যালান্স শিট সঙ্কটের দ্বিতীয় অভিঘাত প্রত্যক্ষ করছে, এর পেছনে রয়েছে তার ভাষায় ‘মহা মন্দা’। এই সঙ্কটকে সে বলেছে প্রাইভেট কর্পোরেশানগুলোর ঋণ জমে জমে সেটা ব্যাংকগুলোর অলস সম্পদে পরিণত হয়েছে।
সুব্রামানিয়ানের মতে, সঙ্কটের প্রথম ধাক্কাটা ঘটেছে ২০০৪-১১ সময়কালে যখন স্টিল, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতের কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক ঋণ দেয়া হয়েছে, যেটার ফল ভালো হয়নি। দ্বিতীয় সঙ্কটটা হলো রুপির নোট বিলুপ্তি-পরবর্তী পরিস্থিতি যেখানে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক কোম্পানিগুলো জড়িত বা ছায়া ব্যাংক ও রিয়েল স্টেট ফার্মগুলো জড়িত।
উচ্চমূল্যের নোটগুলো নিষিদ্ধ করার পর, একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা হয়েছে, যারা এর বড় একটা অংশ ছায়া ব্যাংকগুলোকে ধার দিয়েছে। তারা এই অর্থগুলো রিয়েল স্টেট খাতে প্রবাহিত করেছে।
২০১৭-১৮ নাগাদ রিয়েল স্টেট খাতে যে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় – যার পরিমাণ প্রায় ৫০০০ বিলিয়ন রুপি, তার মোটামুটি অর্ধেকই আসে এই ছায়া ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
সুব্রামানিয়ান বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দেশের বৃহত্তম ছায়া ব্যাংক, আইএলঅ্যান্ডএফএস-এর পতনের ঘটনাটি ছিল একটা ‘বড় ঘটনা’ যেটা বাজারকে জেগে উঠতে এবং তাদের পুরো এনবিএফসি’র (ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক কোম্পানি) পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করে।
বাজার যেটা আবিষ্কার করেছে, সেটা ব্যাপক হতাশার। এনবিএফসি সাম্প্রতিককালে যে সব ঋণ দিয়েছে, তার একটা বড় অংশ গেছে বিশেষ করে রিয়েল স্টেট খাতে, যে খাতটি নিজেই একটা বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে আছে। ২০১৯ সালের জুন নাগাদ ভারতের শীর্ষ শহরগুলোতে অবিক্রিত বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সংখ্যা ছিল এক মিলিয়নের উপরে, যার মূল্য প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন রুপি (১১৩ বিলিয়ন ডলার), যেটা প্রায় চার বছরের বিক্রির সমপরিমাণ।
সুব্রামানিয়ান আর ফেলম্যান বলেছে ভারতে এখন আগে থেকে বয়ে আনা ব্যালান্স শিট সমস্যার সাথে নতুন সমস্যা যুক্ত হয়েছে। এই দুটো বিষয়ই অর্থনীতিকে একটি নিম্নমুখী পথে ঠেলে দিয়েছে।