ব্রিটিশ রানীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে শোক পালন : ‘ব্রিটিশ রাজ’এর প্রতি আনুগত্য?

    1
    833

    উপমহাদেশের মুসলিমদের সম্পদ লুন্ঠনকারী ক্রুসেডার ব্রিটিশ রানীর মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ব্রিটিশদের এদেশীয় গোলাম সরকার।

    শুক্রবার থেকে রবিবার ৩ দিন (৯, ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করবে বাংলাদেশ- এই মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে ক্রুসেডার ব্রিটিশ রানীকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছে দালাল সরকার।

    প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং রানীর আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

    এশিয়া ও আফ্রিকায় কোটি কোটি মানুষের হত্যাকারী এই ব্রিটিশরা। খোদ ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ২০০ বছর জুলুম আর শোষণ করে ব্রিটিশ সন্ত্রাসীরা। উপমহাদেশের মানুষকে হত্যা, নির্যাতন, অঢেল সম্পদ লুটসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ভরা এই ব্রিটিশদের ইতিহাস।

    যুগ যুগ ধরে শোষিত আফ্রিকার হতভাগা মানুষগুলো। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশদের যাঁতাকলে এখনো যারা দরিদ্র দেশের তালিকায়। কথিত উন্নত বিশ্বসভ্যতার এই সময়েও খাবারের অভাবে না খেয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য আফ্রিকান শিশু। এসবের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী এই ব্রিটিশ সন্ত্রাসীরা।

    উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশদের আগ্রাসন রুখতে অসংখ্য আলেম, মুজাহিদ ও সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরেছিল। বহু আন্দোলন সংগ্রামের পর উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশরা বিদায় নেয়। তবে যাবার সময় নিজেদের অনুগত কিছু গোলাম সৃষ্টি করে যায়। যারা সবসময় বৃটিশদের সুখে খুশি ও ব্রিটিশদের দুঃখে মায়াকান্না করতে দেখা যায়। ‘ব্রিটিশ রাজ’এর প্রতি এখনো তাদের আনুগত্যে কোন কমতি দেখা যাচ্ছে না। ব্রিটিশরা যাওয়ার আগে উপমহাদেশের সিংহভাগের নিয়ন্ত্রণ যাদের কাছে দিয়ে গেছে, সেই হিন্দুত্ববাদী ভারতের প্রতিও তাদের ‘আনুগত্য’ অকৃত্রিম।

    গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ রানির মৃত্যুতে তাই এ দেশীয় ব্রিটিশ-পশ্চিমা অনুগতরা ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা শুরু করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশি মিডিয়া নামধারী ব্রিটিশ-পশ্চিমাদের একনিষ্ঠ গোলাম হলুদ মিডিয়ার মায়াকান্নার কোন শেষ নেই রানীর মৃত্যুতে। গোলামীর পরিচয় দিতে অনেকে নিজেদের চ্যানেলের কভার পিকচার হিসেবে যুক্ত করেছে ক্রুসেডার রানির ছবিও।

    গোলাম শাসকশ্রেণি উপমহাদেশের মানুষের ত্যাগ ও সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে ব্রিটিশ মনিবদের রেখে যাওয়া আদর্শ আর আইনের উপর অটল রয়েছে যুগ যুগ ধরে।

    ব্রিটিশ-পরবর্তী পাকিস্তান আমল আর বর্তমান বাংলাদেশ সর্বদাই এসব শাসকশ্রেণি তাদের লাল চামড়ার ব্রিটিশ-পশ্চিমা মনিবদের গোলামীতেই অটল-অবিচল থেকেছে। তাদের রচিত আইন বলবৎ রেখেছে বাংলাদেশে সংবিধানে।

    অথচ ইসলামের আদর্শ আর শরিয়াতের আইনের প্রসঙ্গ আসলেই একদল দালাল বুদ্ধিজীবী বাঙ্গালী সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে ইসলামি আদর্শের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু তারা তাদের ব্রিটিশ মনিবদের আদর্শের বিপক্ষে বাঙ্গালি সংস্কৃতির কথা বলে না। ব্রিটিশদের রচিত আইনের বিপক্ষে বলে না। কথা বলেনা ঔপনিবেশিক দস্যু রানীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের বিপক্ষে।

    যে সকল দালালরা নিজেরা ব্রিটিশদের গোলামীর শিকল গলায় লাগিয়েছে। অন্যদের গলায়ও গোলামীর শিকল বয়ে নিতে চাচ্ছে। তাই এসব ব্রিটিশ-পশ্চিমা দালালদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে সচেতন করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকগণ।



    লিখেছেন : মুহাম্মদ শরিফ



     

    তথ্যসূত্র :
    ১। রোববার পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক
    https://tinyurl.com/yeyn73ut

    ১টি মন্তব্য

    1. এটাই নির্মম বাস্তবতা! হলুদ মিডিয়া এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবি নামধারী আগাগোড়া ইসলাম বিদ্বেষী। মূলত ইসলাম বিদ্বেষই এদের পেশা। জাতীয় চেতনা….বাজ্ঞালি জাতীয়তাবাদ…এসব ওদের আলগা ফাপড় ছাড়া কিছুই নয়।

    Leave a Reply to Ahmad Islam Nibir প্রতিউত্তর বাতিল করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধমুসলিম অধ্যাপকের এফআইআর বাতিলে অস্বীকৃতি : অপরাধ কাশ্মীরের বাস্তব চিত্র উন্মোচন করা
    পরবর্তী নিবন্ধ‘জিরো কোভিড পলিসি’ : উইঘুরদের গণহত্যায় চীনের এক নতুন নীতি