খেলাফতে বিশ্বাসী হওয়ায় কুয়েট ছাত্রকে হেনস্থা : পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

মুহাম্মাদ ইব্রাহীম

2
898

এবার সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের হাতে প্রায় শহীদ আবারার ফাহাদের পরিণতি হতে চলছিল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জাহিদুর রহমান। ইসলামি খেলাফতে বিশ্বাস করা এবং সদ্য হাসিনার ভারত সফর নিয়ে ফেইসবুকে কমেন্ট করায়, রাতভর তাকে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে গুরুতর আহত করে দিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা।

গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের কথিত ছাত্রনেতাদের রুমে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় জাহিদকে। ঠিক যেভাবে আজ থেকে তিন বছর আগে সারারাত নির্মমভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিলো শহীদ আবরার ফাহাদকে, ঠিক একই কায়দায় রাত ১১টা পর্যন্ত লাঠি, স্ট্যাম্প দিয়ে নির্মম শারীরিক নির্যাতন করা হয় জাহিদকে। স্ট্যাম্পের নির্মম আঘাতে ভেঙে দেয়া হয়েছে জাহিদের দুটি পা। এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারায়।

সারা রাতজুড়ে অমানবিক নির্যাতন করার পরও থেমে যায়নি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। রক্তাক্ত ও ভাঙা দু’পা আর অজ্ঞান অবস্থায়ই তারা জাহিদের নামে মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাহিদ পুলিশের হাতে গ্রেফতার অবস্থায় খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছে।

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জাহিদুরকে শুধুমাত্র ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বিশ্বাসী হওয়ায় এবং ভারত ও দালাল হাসিনার বিরুদ্ধে পোস্ট দেওায় কারণেই রাতভর পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। এ কথা প্রমান পাওয়া যায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ রশিদ হলের প্রভোস্ট এমডি হামিদুল ইসলামের বক্তব্যে। সে বলেছে ‘আমাদের কিছু শিক্ষার্থী বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করে জাহিদুর রহমান বিভিন্ন দেশবিরোধী গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লী সফর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছে সে। এটা আমাদের নজরে আসায় ছাত্ররা তাকে প্রথমে একটু জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। সে আমাদের কাছে বলেছে সে খেলাফতে বিশ্বাস করে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।’

জাহিদকে নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের ৫ জনের মধ্যে সাদমান নাহিয়ান সেজান কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক। কুয়েট শিক্ষক সেলিম হোসেন খুনের ঘটনায় সে জড়িত। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের খুটির জোর এখানে এতো বেশি যে, শিক্ষক হত্যায় জড়িত থাকায় ভার্সিটি থেকে আজীবন বহিস্কৃত হয়েও সে হলেই থাকে।

অথচ, দালাল পুলিশ এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে নির্যাতনের শিকার হওয়া অজ্ঞান ছাত্রকেই কিনা গ্রেফতার করল। এই হচ্ছে মুসলিমদের ট্যাক্সের টাকায় লালিত ভারতপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীর অবস্থা।

ছাত্রলীগে সন্ত্রাসীরা হিন্দুত্ববাদী ভারতের দালালি করে এখন এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে, ইসলামী মৌলিক বিষয়ে বিশ্বাস করাও এখন তাদের কাছে মহা অপরাধ। ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বলাও অপরাধ। সুদ, ঘুষ ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে বলা অপরাধ। তাদের কাছে এখন যেন পুরো দেশের মুসলিমরাই জিম্মি। কসাই মোদী ও  দালাল হাসিনার এই ফুট-সোলজারদের ইসলাম-বিদ্বেষ ও জুলুম নিপিড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।



তথ্যসূত্র:
——–
১। ছাত্রলীগের কাছে পিটুনিও খেল, প্রশাসন মামলাও করল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে
https://tinyurl.com/3packkje

2 মন্তব্যসমূহ

  1. বর্তমানে কারাগার যেনো ঈমানদার তৈরির কারখানা!

    ইতিহাস বার বার পুনরাবৃত্তি ঘটে!
    ইনশাআল্লাহ সেদিন দূরে নয়!
    যেদিন জাতি আবারও খেলাফত এর শাসন ব্যবস্থায় বসবাসের করবে…

    আল্লাহ পাক প্রিয় ভাই কে হেফাজতে রাখুন এবং তার মুক্তির ফয়সালা করে দিন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধউত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসা ভেঙে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন
পরবর্তী নিবন্ধমসজিদের ভেতর পূজার অনুমোদন : বাবরির পথেই কি জ্ঞানবাপি?