পর্দা করায় ভাইভা বোর্ডে মুখ না খোলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের একজন মুসলিম ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়েছে বিভাগটির ইসলামবিদ্বেষী শিক্ষকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ই সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনের বাংলা বিভাগের একজন মুসলিম নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে ঐ শিক্ষার্থী পর্দা করার কারণে পুরুষ শিক্ষকদের সামনে চেহারা দেখাতে অস্বীকৃতি জানান এবং ম্যাডামদের সামনে মুখ দেখানোর কথা বলেন। কিন্তু ঐ ইসলামবিরোধী শিক্ষকরা মুসলিম ছাত্রীর এই আবেদনে রাজি না হয়ে ভাইভাতে উপস্থিত থাকার পরও তাকে অনুপস্থিত দেখায়। একই কারণে প্রথম সেমিস্টারের ভাইভাতেও তাকে অনুপস্থিত দেখিয়েছিল ইসলামবিরোধী শিক্ষকরা।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি নিকাব করে ভাইভা পরীক্ষা দিতে গেলে শিক্ষকরা আমাকে নিকাব খোলা সাপেক্ষে উপস্থিতি স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি বারবার তাদেরকে অনুরোধ করি যে, নন মাহরাম কারো সামনে আমি নিকাব খুলি না। আমি একাধিক ম্যাডামের সামনে আমার মুখ খুলে আমার পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষকগণের বক্তব্য তারা আমার নিকাব খুলে চেহারা প্রদর্শন না করলে ভাইভা পরীক্ষা নেবেন না এবং উপস্থিতি স্বাক্ষর করতেও দেবেন না। আমি আবারও তাদের অনুরোধ জানাই যেন, একাধিক ম্যামের সামনে আমার চেহারা শনাক্ত করে নিকাব পরিহিত অবস্থায় আমার ভাইভা নেওয়া হয়। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং আমাকে গত ফার্স্ট সেমিস্টারসহ দুই সেমিস্টারের ভাইভাতে অনুপস্থিত করে দেন। আমি তাদের কাছে বার বার অনুরোধ করলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয় যে, আমার ভাইভা তারা আমার মুখ দেখা ছাড়া গ্রহণ করবে না।
ওই মুসলিম শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমার পর্দা করা কি অন্যায়? আমি শুধু পর্দা করার কারণে ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও কোনো মার্ক পাচ্ছি না। যার ফলে এটি আমার রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়তই এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে ইসলাম পালন করতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের। প্রতিষ্ঠানটির ইসলামবিদ্বেষী শিক্ষকরা কখনও মুসলিম ছাত্রীদের পর্দা নিয়ে কটূক্তি করে, কখনও মুসলিম ছাত্রদের দাঁড়ি-টুপি নিয়ে করে বাজে মন্তব্য। অথচ এসব শিক্ষকরাই আবার নির্লজ্জের মতো পোশাকের স্বাধীনতা, ধর্মের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে নানা বুলি আওড়ায়। মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশের জাতীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামবিদ্বেষীদের এমন দৌরাত্ম্য এদেশের মুসলিমদের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান একটি বাধা বলে মনে করেন ইসলামী চিন্তাবিদগণ।