
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বেড়েই চলছে মৃত্যুর মিছিল। এবার সহিংসতা ঘটছে কিছুটা ভিন্ন উপায়ে। সহায়তার নামে জড়ো করে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো হচ্ছে এলোপাতাড়ি গুলি। খাদ্যের আশায় লাইনে দাঁড়ানো কিংবা এক মুঠো আটা বা তেল সংগ্রহের চেষ্টা—এ সাধারণ মানবিক প্রয়াসেই এখন লাশ হতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের।
৩ জুন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৮ দিনে মার্কিন সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোয় বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০২ জন ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।
গাজার মিডিয়া অফিস এ ঘটনাকে একটি ‘ইচ্ছাকৃত গণহত্যা’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। এছাড়া এটিকে একটি পরিকল্পিত মৃত্যুফাঁদ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহর এক ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯০ জনের বেশি। ২৭ মে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০২ জনে। আহত হয়েছেন আরও ৪৯০ ফিলিস্তিনি। এদিকে রাফাহর ত্রাণকেন্দ্রে রবিবারের হামলার ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তবে বরাবরই এসব হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েল।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৪ হাজার ৫১০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৯০১ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি দমনপীড়ন শুধু প্রাণহানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, কড়াকড়ি আরোপ করে অবরুদ্ধ করা হয়েছে খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রবেশপথও। সন্ত্রাসী ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে আসন্ন ঈদুল আজহায় গাজায় কুরবানির কোনো পশুই ঢোকানো সম্ভব হয়নি। ফলে এবারের ঈদে কুরবানি তো দূরের কথা, সাধারণ মানুষ এক টুকরা মাংসও হয়তোবা পাবে না।
তথ্যসূত্র:
1. Israeli fire kills at least 27 aid seekers in Gaza: Health Ministry
– https://tinyurl.com/yc3cfbj5
2. 102 Palestinian aid-seekers killed by Israel in Gaza in 8 days
– https://tinyurl.com/h3w7xm25