
পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের দেশগুলোতে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা। গত সপ্তাহে বুরকিনা ফাসো’র ইয়াতেঙ্গা প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানীর নিকটতম কুম্ব্রি শহরে মুজাহিদদের এক অভিযানে জান্তা বাহিনীর অন্তত ৬৫ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১লা জুন রবিবার, বুরকিনা ফাসোর উত্তরাঞ্চলীয় ইয়াতেঙ্গা প্রদেশের কুম্ব্রি শহরে অবস্থিত জান্তা বাহিনীর সামরিক ঘাঁটিতে সশস্ত্র যোদ্ধারা একটি অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছেন। এদিন সকাল ৬টার দিকে ‘জেএনআইএম’ এর সাথে যুক্ত মাসিনা ব্রিগেডের প্রায় ১৫০ মুজাহিদ বিভিন্ন দিক থেকে জান্তা বাহিনীর সামরিক ঘাঁটিটিতে একযোগে আক্রমণ চালান। এসময় বুরকিনান জান্তা ভারী প্রতিরোধ গড়ে তুলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়, কেননা ‘জেএনআইএম’ ড্রোনের সাহায্যে জান্তার অবস্থানগুলো চিহ্নিত করছিল এবং মাঠে থাকা মুজাহিদদের সে অনুযায়ী দিকনির্দেশনা দিচ্ছিল। ফলে খুব সহজেই মুজাহিদদের বন্দুক থেকে বের হওয়া বুলেটের সাথে সাক্ষাৎ হয় জান্তা সদস্যদের।
ফলশ্রুতিতে জান্তা বাহিনীর একাধিক সিনিয়র সামরিক অফিসার সহ অন্তত ৬৫ সেনা সদস্য নিহত এবং আরও কয়েক ডজন সৈন্য আহত হয়। অন্য সৈন্যরা জীবন বাঁচাতে কুম্ব্রি সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
কুম্ব্রি শহরটি বুরকিনা ফাসোর ইয়াতেঙ্গা প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী ওয়াহিগৌয়া থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মুজাহিদের হামলার শিকার এই শহর ও সামরিক ঘাঁটিটি রাজধানী ওয়াগাডুগুর দিকে যাওয়া পথে জান্তা বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা বাধ এবং ওয়াহিগৌয়া ও ওয়াগাডুগুর মধ্যকার কৌশলগত অবস্থান। কিন্তু ‘জেএনআইএম’এর ১লা জুনের অভিযানের পর জান্তা বাহিনী সামরিক ঘাঁটি ও কুম্ব্রি শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এসময় জান্তা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ব্যাক্তিত্ব ও মুজাহিদদের হামলার শিকার ঘাঁটির প্রধান কমান্ডার ক্যাপ্টেন জোন্ডো জুলিয়েনও নিহত হয়। একই সাথে ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা জান্তা বাহিনীর ১১ সদস্যকে বন্দী করে নিয়ে যান। মুজাহিদিনরা ধ্বংস ও পুড়িয়ে দেন ২টি সাঁজোয়া যান সহ শত্রু বাহিনীর ৬টি সামরিক যান।
আয-যাল্লাকা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ‘জেএনআইএম’ নিশ্চিত করেছে যে, কুম্ব্রি সামরিক ঘাঁটিতে মুজাহিদদের অভিযানে জান্তা বাহিনীর ডজন ডজন সৈন্য নিহত হয়েছে। সেই সাথে মুজাহিদিনরা শত্রু ঘাঁটি থেকে বহু অস্ত্র শস্ত্র গনিমত পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১টি সামরিক যান, ১টি ১৪.৫ ক্যালিবার অস্ত্র, ১টি এসপিজি আর্টিলারি বন্দুক, ১টি মর্টার, ৪টি ডিএসএইচকে, ৬টি আরপিজি, ১৪টি পিকে, ৪৭টি ক্লাশিনকোভ, ১৬৮টি ম্যাগাজিন, গোলাবারুদ ভর্তি ৩৮টি বাক্স, কয়েক হাজার রাউন্ড বুলেট, ৭টি মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য বহু সামরিক সরঞ্জাম।
তথ্যসূত্র:
– https://tinyurl.com/nhe4ye4n