
আমীরুল মু’মিনীন শাইখ হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা উলামাদের নবীদের উত্তরসূরী করেছেন এবং তাদের উপর সমাজ, রাষ্ট্র ও দ্বীনের সার্বিক দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
গত ১৫ জুন আফগানিস্তানের কান্দাহারে জিহাদি মাদরাসাগুলোর শিক্ষকমণ্ডলী, প্রশাসক ও তত্ত্বাবধায়কদের নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী এক শিক্ষামূলক ও সংস্কারমুখী সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এই বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে দেশটির উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী, জিহাদি মাদরাসার মহাপরিচালকসহ বহু উলামা, পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারটি কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। পরে আমীরুল মু’মিনীন শাইখ হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (হাফিযাহুল্লাহ) অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা ও উপদেশমূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি উলামা ও সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার অবদানের প্রশংসা করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘উলামাগণ কেবল ব্যক্তিগত ইবাদাতের জন্য নিযুক্ত নন; বরং নবীদের উত্তরসূরি হিসেবে তাদের ওপর সম্মিলিত দায়িত্ব পালন, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা, জিহাদে অংশগ্রহণ, শরিয়াহ বাস্তবায়ন, বিচার কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। উম্মাহর সামাজিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উলামাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখা অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়— উলামারা সব যুগেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও দ্বীনের হেফাজতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। তারা মিম্বর থেকে ফতোয়া, শিক্ষা, জিহাদ, দাওয়াত ও উপদেশের মাধ্যমে ইসলাম রক্ষা করেছেন, মুজাহিদ তৈরি করেছেন, জনসাধারণকে জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং এই পথে মহান ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
জ্ঞান ও দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সমাজ সংস্কার জ্ঞানের মাধ্যমেই সম্ভব, আর শরিয়াহ প্রতিষ্ঠা করতে হলে দ্বীনি শিক্ষার পুনর্জাগরণ অপরিহার্য। ইসলামি জ্ঞানের পুনর্জাগরণ ছাড়া সমাজে প্রকৃত দ্বীন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।’
পরিশেষে তিনি জিহাদি মাদরাসাগুলোর শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ছাত্রদের মানসিক ও আত্মিক গঠনে আপনাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। তাদের আকীদা, চিন্তা ও চরিত্র গঠনে যত্নবান হোন। একই সঙ্গে তাদের পিতা-মাতা, শিক্ষক ও অন্যান্যদের হক সম্পর্কে সচেতন করুন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা, সম্পর্ক ও আস্থা বজায় রাখুন। কারণ, যেখানে আস্থা নষ্ট হয়, সেখানে আনুগত্য দুর্বল হয়; আর সেখান থেকেই বিভক্তির সূচনা হয়।’
এছাড়াও এই সময় তিনি স্বাধীনতা বিরোধী পলাতক সকল আফগানের জন্য সাধারণ ক্ষমার ফরমান বাস্তবায়নে উলামাগণ যে ভূমিকা রেখেছেন তার প্রশংসা করেন।
তথ্যসূত্র:
1. Esteemed Amir-ul-Momineen (May Allah Protect Him) Addresses One-Day Seminar for the Heads of Jihadi Madrasas
– https://tinyurl.com/47xzfhd2