নাইন-ইলেভেনে মুজাহিদগণের সুমহান যুদ্ধনীতি!

5
3207
নাইন-ইলেভেনে মুজাহিদগণের সুমহান যুদ্ধনীতি!

পশ্চিমা কূটরাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে বিষয়টি তাদের গণতন্ত্রের মাঝে বিদ্যমান। তারা বাহ্যত আইন প্রণয়ন করে জনগণের স্বার্থে যদি তা রাষ্ট্রের উচ্চাভিলাসী স্বার্থ বিরোধী না হয়। যদি আইনের আশ্রয় নিয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থোদ্ধার না হয় তাহলে তারা বিকল্প কোনো কর্মকৌশলের উপর আইনের প্রলেপ লাগায় অথবা আইন সংশোধন করে। যদি এভাবে কার্যসিদ্ধি সম্ভব না হয় তাহলে তা বাস্তবায়ন করা হয় পর্দার আড়াল থেকে। ফলে জনগণ ও কংগ্রেসম্যানরা থাকে এ বিষয়ে অজ্ঞ। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপ্রধানকেও জানানো হয় না, কারণ এগুলো কার্যকর করা হয় সিক্রেট ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে, যারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে কোনো আইনকে পদদলিত করতে দ্বিধান্বিত হয়না। তুমিও (ওবামা) হয়তো জানতে না যে, তোমার বিশেষ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি জার্মান চ্যান্সেলরের সেটেলাইট ফোন ও তার সভাসদস্যদের কম্পিউটারে আঁড়ি পেতেছিল।

অপরদিকে যদি সেই স্বার্থ উদ্ধারের জন্য স্বৈরশাসকের পৃষ্ঠপোষণ করতে হয় বা কোথাও গণহত্যার মতো কাণ্ড ঘটাতে হয় অথবা গণবিপ্লব বা যুদ্ধের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের পরিবর্তে কংগ্রেসম্যান ও সেনেটররা স্বার্থোদ্ধারে এগিয়ে আসে। তারা আইন, চিন্তাশীল সম্প্রদায় (যেমন র‍্যান্ড করপোরেশন) ও গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করে। মিডিয়া প্রয়োজন মাফিক মগজ ধোলাই করতে থাকে, যুদ্ধের অনিবার্যতা প্রচার করতে থাকে। স্বৈরশাসকদের ইমেজ বৃদ্ধি ও তাদের প্রতিপক্ষকে কুৎসিৎভাবে উপস্থাপন করতে থাকে। আর স্বৈরশাসকের জুলুম-নির্যাতন ও গণহত্যার মতো বর্বরতার বিপক্ষে মৌখিক সমালোচনার মাধ্যমে ভালো মানুষ দেখায় ও প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে। সেই সাথে বুদ্ধিজীবীরা বক্তৃতা, বিবৃতি ও লিখনীর মাধ্যমে বুঝানোরা চেষ্টা করে যে, এই মুহূর্তে যুদ্ধের কোনো বিকল্প নেই; রাষ্ট্র মারাত্মক হুমকির মুখে। শত্রুরা (কাল্পনিক) আমাদের অর্থব্যবস্থা ও জাতিকে ধ্বংসের পায়তারা চালাচ্ছে। স্বৈরশাসক সিসিকে দিয়ে হাজারো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীকে হত্যা করানো হলো। তাদের জন্য পশ্চিমা মিডিয়ার চোখ দিয়ে এক বিন্দু অশ্রুও গড়িয়ে পড়েনি। আমেরিকায় তৈরি বোমারু বিমানের হামলায় গাজার একটি মাত্র এলাকায় শতাধিক লোক নিহত হলো, তখন তাদের মিডিয়া এর প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা, উল্টো বরাবরের মতো উচ্ছাস প্রকাশ করে বলল, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলই একমাত্র রাষ্ট্র যেখানে গণতন্ত্রের চর্চা হয়।

পশ্চিমারা অন্যদের সাথে নৈতিক আচরণ করবে -তা কিছুতেই সম্ভব নয়। তারা স্বার্থপূজারী। যখন শাইখ উসামা রহিমাহুল্লাহকে বিনা বিচারে হত্যার পর তাঁর দেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো, তখন পুরো বিশ্ব তোমাদের নৈতিকতা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল। তোমাদের সেনারা তালেবানদের ক্ষত-বিক্ষত করলো আর বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করল মার্কিন সেনাদের নৈতিক দৈন্যতা। তারা ফালুজায় মসজিদ গুঁড়িয়ে দিল। আবু গারিব এবং গোপন টর্চার সেলগুলোতে নির্যাতনের এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করল। সোমালিয়া, ইয়েমেন এবং আরও কিছু দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালানো হলো এবং এখনো অব্যাহত আছে বরং সন্ত্রাসের মাথা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইরাককে তোমরা রক্তসাগরে পরিণত করেছো। ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের সন্ধান কি তোমার পূর্বসূরীরা পেয়েছিল? না! বরং তারা সেখানে পেয়েছিল মার্কিন দূতাবাস নির্মাণের জন্য সুবিধাজনক বিশাল এলাকা। তারা সেখানে বিশ্বের বৃহত্তম দূতাবাস নির্মাণ করল। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তেল-গ্যাস কোম্পানীর স্বার্থে কাজ করে এবং মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পথ সুগম করে। তোমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় খুব প্রচার করেছিল যে, আল-কায়েদার সাথে ইরাক সরকারের যোগসাজশ রয়েছে। এবং এই অভিযোগে ইরাককে টুকরো টুকরো করা হলো। ইরাক সরকার ও আল-কায়েদার মাঝে কোনো সংশ্লিষ্টতা তোমার পূর্বসূরীরা উদ্ধার করতে পেরেছিল কি?

তোমার সরকারের ছত্রছায়ায় দ্বিখণ্ডিত করা হলো। দুটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের জন্ম হলো। তোমার এবং তোমার মিত্রদের যুদ্ধে চারিত্রিক মূল্যবোধের কোনো বালাই নেই। সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের নামে বহু মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি করছ। ইরাক ও আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছ কি? বাস্তবতা হচ্ছে ইরাক ও আফগানিস্তান আজ বিশ্বের অস্থিতিশীল রাষ্ট্রসমূহের মাঝে অন্যতম। তবুও কি তুমি (ওবামা) বিশ্ববাসীকে বিশ্বাস করতে বলবে যে, তোমার সমকামী সৈনিকরা আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে?

বিপরীতে শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহি.) যুদ্ধ ও শান্তি উভয় অবস্থায় উন্নত চরিত্র ও মূল্যবোধের ধারক বাহক ছিলেন। তিনি তোমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী নিউইয়র্কে হামলা করেছেন, তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম এবং গির্জার যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেছেন। তেমন আট মিলিয়নেরও বেশি অধিবাসীর এই শহরটির বসতিসমূহকে হামলার ক্ষয়ক্ষতি থেকে দূরে রেখেছেন। অপরদিকে প্রায়ই দেখা যায়, তোমাদের বিমান হামলায় নিহতদের শতভাগই ছিল শিশু। যেমন, কোনার প্রদেশে লাকড়ী সংগ্রহ করতে যাওয়া ১২শিশু তোমাদের চালাকবিহীন বিমান হামলায় নিহত হয়। ইয়েমেনে একই হামলায় ২৩ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়। তেমনি হত্যা করা হয় আফগানিস্তানের নাঙ্গাহারে বিবাহ অনুষ্ঠানের অতিথিদেরকে। ২০১০ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন বিশেষ টিমের নৈশকালীন এক বিমান হামলায় বহুসংখ্যক লোক নিহত হয়। জাতিসংঘের কর্মকর্তা নাদের নাদেরী নিহতের সংখ্যা ৮০ বলে উল্লেখ করেছেন। বাস্তবে সেই ঘটনায় চার শতাধিক লোক নিহত হয়। ২০০৯ সালে তোমার দেশ আফগানিস্তানে আঠারো হাজার দুইশত চুয়াত্তর বার বিমান হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার একশত ষাটটি হামলা ছিল চালকবিহীন বিমান থেকে।

প্রযুক্তি নিয়ে তোমাদের গর্বের শেষ নেই। তবে শাইখ উসামার (রহঃ) হামলা প্রযুক্তি নির্ভর ছিলনা। সিক্রেট এজেন্সি, চালকবিহীন ড্রোন, স্মার্ট বোমা, যুদ্ধবিমান ও স্যাটেলাইট স্টেশনের সহায়তা ছাড়াই তিনি নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হেনেছেন। এসব তিনি করেছেন কান্দাহারের দূর পর্বতে অবস্থানকালীন সময়ে। তাঁর ও তাঁর লক্ষ্যস্থলের মাঝে ছিল হাজারো মাইলের দূরত্ব। তবুও তিনি লক্ষ ভেদ করেছেন নিপুণভাবে। একটু ভেবে দেখ!, যদি শাইখ উসামা (রহঃ) সাধারণ নাগরিকদের হত্যার ইচ্ছা করে থাকেন তবে কেন তিনি ইন্ডিয়ান পয়েন্ট নিউক্লিয়ার স্টেশন বা সুপার বোল গেইমে হামলা করেননি? তারপর গাজা উপত্যকার কথা ভাব এবং নিজেকে আবারো অনুরূপ প্রশ্ন কর।

বিশ্ববাসী দেখেছে, শাইখ উসামা (রা.) এর দয়ার্দ্রতা। মুজাহিদগণ তোমাকে চ্যালেঞ্জ করেছে, নাইন ইলেভেনের হামলায় নিহতদের মাঝে দশজন শিশুও কি দেখাতে পারবে? ২০০৯ এবং ২০১৪ইং সনে তোমার ও তোমার মিত্রদের হামলায় নিহতদের মধ্যে এক হাজার শিশুর তালিকা প্রকাশ করতে মুজাহিদগণ প্রস্তুত আছেন। এটা গেল কেবল তোমার শাসনামলের কথা। ইতিপূর্বে তোমরা ইরাক, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিনসহ আরও বহু দেশে লক্ষাধিক শিশু হত্যা করেছে। সে পরিসংখ্যানও মুজাহিদগণ তোমাদেরকে দিতে প্রস্তুত আছেন।

তোমরা ১৫ টিরও অধিক বৈবাহিক অনুষ্ঠানে বিমান হামলা চালিয়েছ। এখানেই শেষ নয়, তোমরা দুইশ’রও বেশি মসজিদ এবং পঞ্চাশ সহস্রাধিক বসতবাড়ি ধ্বংস করেছ। নাইন ইলেভেনের হামলায় পাঁচটি বসতবাড়িও কি ধ্বংস হয়েছে? দেখাতে পারবে? পারবে না।

আফগানিস্তান, ইরাক ও ফিলিস্তিনীরা এমন পাঁচ মিলিয়ন মানুষের নামের তালিকা দিতে সদা প্রস্তুত, যারা তোমাদের হামলায় গৃহহীন হয়েছে। বিষাক্ত ইউরোনিয়াম বোমার তেজস্ক্রিয়তার ফলে ফালুজার হাসপাতালসমূহে তিন শতাধিক শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। তোমাদের সাবেক মিত্র বাশার আল আসাদ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করেছে। এখন কোথায় গেল তোমাদের বিবেক ও মানবতা?

আবু মুসআব সূরী, আবু খালেদ সূরীসহ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আটক আরও বহু মুজাহিদকে কি তোমরা বাশার আল আসাদের হাতে তুলে দাওনি? সিরিয়ার কত গ্রাম ও শহর ভস্মীভূত হয়েছে, তার হিসাব কি তোমার জানা আছে? নাকি গলফ আর বাস্কেট বল নিয়ে খেলতে থাক?

তোমাদের লজ্জা হয়না? এতকিছুর পরও কীভাবে বল, মুজাহিদগণ বসতবাড়ি ও সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা করে?

বিশ্বের প্রায় সকল দেশের সরকার তোমাদের স্বার্থ রক্ষা করে কাজ করছে। তবুও অধিকতর স্বার্থোদ্ধারে তোমরা ন্যায়-অন্যায়ের পরোয়া না করে এসব রাষ্ট্রপ্রধানদের মদদ দিয়ে যাচ্ছ।

১৯৮৮-এর ছাত্র আন্দোলনে বার্মার সামরিক জান্তা কয়েক হাজার বার্মিজ শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে, তখন মার্কিন সরকার মিয়ানমারের উপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছিল। অপর দিকে তারা যখন রোহিঙ্গাদের ত্রিশ হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল, দুই লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমকে বিতাড়িত করল, ঠিক তখন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্মিজ সরকারের জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিয়ে তাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করল। আর মুসলিম উম্মাহ এই পাশবিক হত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের নীরব সাক্ষী হয়ে থাকল। তুমি কীভাবে এই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদেরকে ভুলে থাকতে পেরেছ? কয়েক প্রজন্ম ধরে তারা রাখাইনে বসবাস করছে, অথচ তাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। তুমি কি জান, রোগ-শোক ও অনাহারে ক্লিষ্ট রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ত্রান নিয়ে আসা সংস্থাসমূহকে মিয়ানমার সরকার ফিরিয়ে দিয়েছে? মানবাধিকার কর্মীদেরকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? ডাক্তারদের প্রবেশ ও চিকিৎসা সেবার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল? এত কিছুর পরেও তোমার সরকার মিয়ানমারে বিনিয়োগ বন্ধ করা তো দূরে থাক, তা দ্বিগুণ করেছে! তুমি কি ইসরায়েলকে খুব সম্পদশালী মনে কর? তাদের নিজস্ব সম্পত্তি কি রুমানিয়া, স্পেন, মিসর, দক্ষিণ কোরিয়া ও সৌদির চেয়ে বেশি? ইসরায়েলকে প্রাধান্য দিয়ে সামাজিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে মার্কিন সরকারের ঋণের বোঝা দিন দিন ভারী হচ্ছে। ফিলিস্তিন ও লেবাননের মুসলিদের হত্যা করতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ কমিয়ে সেই অর্থে ইসরায়েলের হাতে মারণাস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এসবের কারণ হচ্ছে তুমি এবং তোমার পদে যারা থাকে সিদ্ধান্ত তারা গ্রহণ করে না। সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় অন্য কোথাও! পর্দার আড়ালে। তোমার কি মনে পড়ে ২০১৩ সালে বলেছিলে, ফিলিস্তিনীদেরকে তাদের ভূমিতে চাষাবাদে বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই, পশ্চিম তীরে ছাত্র আন্দোলনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার এবং ফিলিস্তিনীদেরকে তাদের ভূমি থেকে বিতাড়নের অধিকার কারো নেই? অতঃপর যখন ফিলিস্তিনে গণহত্যা শুরু হলো, তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো, তাদেরকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত করে যাযাবরের মতো জীবন যাপনে বাধ্য করা হলো তখন তোমরা বলে উঠলে, “ইসরায়েলিরা যা করছে তা আত্মরক্ষা ছাড়া আর কিছুই নয়।” শুধু কি তাই, গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলাকালে মার্কিন সরকার তাদের কাছে সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করেছিল। এসবের কারণ হলো, তোমাদের কসাই-মিত্র নেতানিয়াহু জানিয়েছিল যে, ইসরায়েল যদি হামাসকে পরাজিত করতে পারে তাহলে মিসর, আরব আমিরাত, সৌদি ও জর্ডানের স্বৈরশাসকরা যারপরনাই আনন্দিত হবে। অথচ এই হামাস তো তোমাদের সৃষ্ট গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় এসেছে। তোমাদের সন্তানরা যখন হোয়াইট হাউসের পেছনে বাগানে বিনোদনে রত, তখন বিশ্ববাসী দেখছিল তোমাদের বোমার আঘাতে রমজানের বিকেলে নদীর পাড়ে খেলতে থাকা ফিলিস্তিনী শিশুরা কীভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিল। আল্লাহ বলেন-

اسْتِكْبَارًا فِي الْأَرْضِ وَمَكْرَ السَّيِّئِ وَلَا يَحِيقُ الْمَكْرُ السَّيِّئُ إِلَّا بِأَهْلِهِ

অর্থ: “পৃথিবীতে ঔদ্ধত্যের কারণে এবং কুচক্রের কারণে, কুচক্র কুচক্রীদেরকেই ঘিরে ধরে। তারা কেবল পূর্ববর্তীদের দশারই অপেক্ষা করছে। অতএব আপনি আল্লাহর বিধানে পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতিনীতিতে কোনো রকম বিচ্যুতিও পাবেন না”। -সূরা ফাতির, আয়াত ৪৩

সাধারণভাবে বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই যুদ্ধ ও শান্তির সময়কালের নীতিমালা, উন্নত চরিত্র ও মূল্যবোধের ধার ধারেনা। আর ইউরোপ ও আমেরিকার কাছে এসবের কোনোই মূল্য নেই। অথচ, নাইন-ইলেভেনের মত হামলাতেও মুজাহিদগণ যুদ্ধনীতি পরিপূর্ণভাবে লক্ষ্য রেখেছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন। ইসলাম ও মুসলিমদের দুশমন আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বাণিজ্যিক ভবনে হামলা করেছেন, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল বা বসতবাড়িতে হামলা করেননি। হামলাটাও করেছেন এমন সময় যখন সাধারণ মানুষ ভবনগুলোতে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আল্লাহ মুজাহিদগণকে সফলতা দান করেছেন, আমেরিকার দম্ভকে এই হামলার মাধ্যমে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছেন।


উৎস: ওবামার প্রতি চিঠি: ৯/১১ অপারেশনের নেপথ্য কারণ । লেখক: শায়খ খালিদ শেইখ মুহাম্মাদ (ফাক্কাল্লাহু আসরাহ)

5 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেন ঘটেছিল ৯/১১ ? এমন ঘটনা আবারো কি ঘটতে যাচ্ছে ?
পরবর্তী নিবন্ধফটো রিপোর্ট | সুলতান মাহমুদ গজনভী” প্রশিক্ষণ শিবিরে তালেবান মুজাহিদদের প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ের দৃষ্টিনন্দনীয় কিছু দৃশ্য!