চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাতের অন্ধকারে বসে ছিলেন আবদুল্লাহ (ছদ্মনাম)। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাজ্য রাখাইনের বাসিন্দা আবদুল্লাহ (ছদ্মনাম) এবং তার ৩০ প্রতিবেশীকে অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে ট্রাকে তোলে মিয়ানমারের সেনারা। এরপর সেই ট্রাক একটি সামরিক ঘাঁটির উদ্দেশে রওনা দেয়।
অন্ধকারের মধ্যে চার ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষার পর সকালেই তাদের এক সেনা কমান্ডারের সামনে হাজির করা হয়। ওই সেনা কর্মকর্তা তাদের স্থানীয় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করার নির্দেশ দেয়।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসাব অনুসারে, ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীতে জনবল বৃদ্ধি করতে গত ফেব্রুয়ারিতে বাধ্যতামূলক যোগদানের আইন কার্যকর করে জান্তা। আইন অনুসারে, দেশটির ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী সব নারীকে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কাছে অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। আরাকান আর্মি স্থানীয় রাখাইন বৌদ্ধদের নিয়ে গঠিত একটি সংগঠন।
মিয়ানমারে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগদানের আইনটি শুধু দেশটির নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। জান্তা সরকারের আইনের কথা ধরলে, আইনটি রোহিঙ্গাদের জন্য প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়। কারণ, ১৯৮২ সালের এক আইনের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে দেশটি।
রোহিঙ্গারা বলেছেন, সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী—দুই পক্ষই তাদের হয়ে লড়াই করতে চাপ দিচ্ছে। তারা যেখানে থাকেন, এলাকাটি যার নিয়ন্ত্রণে, তারা সেখানে তাদের হয়ে লড়াইয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে রোহিঙ্গাদের অনেকের আশঙ্কা, তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র:
১. মিয়ানমারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের
– https://tinyurl.com/5dh4pxk8