ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদে যোগ দিল আয়ার‌ল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের শিক্ষার্থীরা

0
109

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর, সেই প্রভাব বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোড়ন তুলতে শুরু করেছে। আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের ও সুইজারল্যান্ডের লুজান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদের ঢেউয়ে শামিল হয়ে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।

ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধের দাবিতে গত ১৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, পরে তা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান বিক্ষোভ এইপর্যায়ে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এই তালিকায় যুক্ত হয় ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, ভারত ও লেবাননের নাম।

ডাবলিনে শুক্রবার শিক্ষার্থীরা শিবির গেড়ে বিক্ষোভ শুরু করলে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। শনিবার ক্যাম্পাসে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করে তারা এবং ‘বুক অব কেলস’ প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয়, যা আয়ার‌ল্যান্ডের শীর্ষ পর্যটক আকর্ষণ বলে জানায় রয়টার্স।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রী সংসদ জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে হওয়া বিভিন্ন প্রতিবাদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য কর্তৃপক্ষ তাদের ২,১৪০০০ ইউরো জরিমানা করেছে।

সংসদ এই কথা জানানোর পর ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদকারীরা শিবির স্থাপন করে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করতে শুরু করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ও যেসব কোম্পানির সঙ্গে ইসরায়েলের মিত্রতা আছে সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার দাবি জানায়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রী সংসদের সভাপতি লাজলো মোনারফিয়া সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেছেন; তাতে দেখা যায়, যে ভবনে ‘বুক অব কেলস’ প্রদর্শনী হচ্ছিল সেটির প্রবেশপথে বেঞ্চ স্তূপ করে রেখে আটকে দেওয়া হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের লুজানে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী একটি ভবন দখল করে নিয়ে বিক্ষোভ করছে ও বিভিন্ন দাবি জানাচ্ছে। তাদের এসব দাবির অন্যতম ইসরায়েলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বন্ধ করা।

শনিবার এখানকার এক প্রতিবাদকারী সুইস টেলিভিশনকে বলেন, “দুইশরও বেশি দিন ধরে ফিলিস্তিনিরা মারা যাচ্ছে, কিন্তু আমরা এ নিয়ে কিছুই বলছি না। এখন সরকারগুলোকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়েছে, কিন্তু তারা তা করছে না। তাই আমরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এতে যুক্ত করতে চাইছি।”

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোতেই বিক্ষোভকে ঘিরে অন্তত ৬১টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ৪৭টি ক্যাম্পাস থেকে ২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে অস্থায়ী তাঁবু সরিয়ে নিতে অস্বীকার করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ বল প্রয়োগ করে তাঁবু সরানোর চেষ্টা চালালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের জেরে ২৫ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।


তথ্যসূত্র:
1. Irish, Swiss students launch campaign in solidarity with Palestine
https://tinyurl.com/yc68ud4v
2. Irish, Swiss students launch campaign in solidarity with Gaza
https://tinyurl.com/4azv4y5d

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধফিলিস্তিনের জিহাদ || আপডেট – ৬ মে, ২০২৪
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যসেবা খাতেও পিছিয়ে নেই ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের অগ্রগতি