কক্সবাজারে স্বামীকে জিম্মি করে নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : দায় কার?

মাহমুদ উল্লাহ্‌

1
1414
কক্সবাজারে স্বামীকে জিম্মি করে নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : দায় কার?

মনে আছে গত বছরের সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের গণধর্ষণের কথা। স্বামীকে আটকে রেখে প্রাইভেটকারের মধ্যেই গৃহবধূকে একে একে ধর্ষণ করে আট নরপশু। তারা দম্পতির সাথে থাকা টাকা, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুলও ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আটকে রাখে তাদের প্রাইভেটকারও। নানা ইস্যুর চাপে আমরা ভুলে যাই। আর অপরাধীরা সরকার দলীয় অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগের হওয়ায় তেমন কোন বিচারও হয় না। যার কারণে অপরাধের পুনরাবৃত্তি হতে থাকে।

এবারের ঘটনা আরো মারাত্মক।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারে বেড়াতে এসে শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন। বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে গিয়ে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা-কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যায় পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তিন যুবক তাকে তুলে নিয়ে যান পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে। সেখানে তারা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে নেওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ওই নারী আরও জানান, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন তিনি।
এদিকে, স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় সেবা ৯৯৯ ফোন করে সহযোগিতা চাইলেও ওই নারীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি পুলিশ। কথিত জনগণের বন্ধু পুলিশ তাকে সাহায্য কিংবা উদ্ধার করার পরিবর্তে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয়।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘বারবার হাতে-পায়ে ধরলেও তারা আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। বেড়াতে এসেছিলাম বেতন পেয়েছি সেই খুশিতে। এখন স্ত্রীর অবস্থা ভালো নয়।’
এঘটনার সাথেও সরকার দলীয় ক্যাডাররা জড়িত থাকায় মিডিয়া তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে নানা তালবাহানা করতে থাকে। সামাজিক মাধ্যমে তাদের পরিচয় প্রকাশ হয়ে তীব্র সমালোচনা হওয়ায় মিডিয়া তাদের পরিচয় প্রকাশ করে। যে, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনই কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। ঘটনার পর থেকে সাদ্দামের সঙ্গে আশিক, জয়া ও অন্যদের বিভিন্ন সময় তোলা নানা ধরনের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী পরিচয় দিয়ে আশিক, বাবু জয়া, রেশাদ, হাসান, আমিনসহ আরও অনেকে হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় মাদক, ছিনতাই, দখলসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে চান না। বুধবারও নারীকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে আশিকসহ অন্যন্যরা।

মানবরচিত গণতন্ত্রের বিচারহীন ব্যবস্থায় এই ক্ষমতাসীন সন্ত্রাসীরা জানে যে, ধরা পড়ে গেলেও দের কোন সমস্যা হবে না।
সঠিক ইসলামী বিচার ব্যবস্থা থাকলে এমন কাজ করার করার দুঃসাহস কেউ করতো না বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ। এই মানবরচিত সিস্টেমের পরিবর্তন ছাড়া তাই ন্যায়বিচার ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তারা।

তথ্যসূত্র:
—-
১.নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ৭ জনকে আসামি করে মামলা
https://tinyurl.com/3jypvvd3

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুসলিম যুবককে গুলি করে খুন : ৪০ ঘণ্টা পরেও লাশ ফেরত দেয়নি সন্ত্রাসী বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধপাকিস্তানে বাড়ছে তালিবানের হামলা, দুইদিনে হতাহত আরও ১৬ গাদ্দার সেনা