২০২১ সালে দেশের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত সেবা খাত হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। হিন্দুত্ববাদীদের দালাল হাসিনা সরকার এ খাতের প্রায় অধিকাংশ বড় বড় পদেই হিন্দুদের বসিয়ে রেখেছে। তারা ক্ষমতার অপব্যাবহার করে দুর্নীতির সাগর বানিয়ে নিজেরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে; আর তাদের ‘মাতৃভূমি’ ভারতে সুম্পদ পাচার করছে। অপরদিকে বাংলাদেশী মুসলিমদের জীবনকে তারা নানাভাবে হয়রানি করে পেরেশান করে তুলছে; দিনভর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাটুনির পরও পরিবারে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারছেননা মুসলিমরা।
এমনি এক হিন্দু পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা। নিজের নামে রয়েছে তার প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ। আর তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর নামে রয়েছে ১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকার সম্পদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে তাদের অঢেল সম্পদের তথ্য-প্রমাণ। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক সূত্র বলছে, তার আসল সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে বহুগুণ বেশি।
তবে দুদক সূত্র জানায়, পুলিশ বিভাগে চাকরি করার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে সুভাষ চন্দ্র সাহা। দুর্নীতির দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কৌশলে সিংহভাগ সম্পদ রেখেছে স্ত্রীর নামে। আর ‘মাতৃভূমি’ ভারতে কত টাকা পাচার করে রেখেছে এখনো তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত।
গত ২৮ আগস্ট সুভাষ চন্দ্র সাহার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। এরপর ৩০ আগস্ট সাবেক এই পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে অনুসন্ধান প্রতিবেদন।
দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, সুভাষ সাহা ও তার স্ত্রীর নামে মোট ১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬১ হাজার ৬৪ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে রীনা চৌধুরীর স্থাবর সম্পদ ৩ কোটি ৯ লাখ ২৫ হাজার ১৫৯ কোটি টাকার। অস্থাবর সম্পদ ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার ১০৪ টাকার। এ ছাড়া আরও সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। রীনা চৌধুরীর নামে মোট সম্পদ ১৩ কোটি ৬১ লাখ ৩২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকার। দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৪ টাকার সম্পদ।
সুভাষ চন্দ্র সাহার নামে স্থাবর ১৬ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৫ টাকার ও অস্থাবর সম্পদ ২ কোটি ৮১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪৭ টাকার। তার নামে মোট সম্পদ ২ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ টাকার। ওইসব সম্পদের উৎস হিসেবে তার দুর্নীতি ব্যতিত অন্য কোন মাধ্যম নেই।
দুদকে পেশ করা বিবরণীতে সম্পদের উৎস হিসেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহা ট্রেডার্সের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এটি একটি নামমাত্র প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এ ছাড়া মৎস্য চাষ, মৌসুমি পণ্যের স্টোরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তার সরেজমিন অনুসন্ধানে এসব ব্যবসায়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
তবে এর চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে দুদকের বিরুদ্ধেও দূর্নীতির অভিযোগ আছে। প্রকৃতপক্ষে এ সমস্ত হিন্দুদের লুট করা টাকার পরিমাণ আরো বেশি। কথিত আছে, তারা বড় অংক ঢাকতে দুদককে দিয়ে ছোট অংক প্রকাশ করিয়ে একটা দফারফা করে নেয়। দুদকই এভাবে লুটেরাদের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে শক্তিশালী অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে হিন্দুদের প্রতি তারা একটু বেশিই ‘নমনীয়’।
এভাবেই হাসিনার এই ক্ষমতাবান ‘আপনজনেরা’ দিল্লীর দাদাবাবুদের দাপটে নিজেদেরকে ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে নিয়ে গেছে। দুদক সামান্য কিছু নাটক সাজিয়ে তাদের বড় অপরাধগুলো আড়াল করতে সহায়তা করছে। আর হাসিনার আপনজনেরা সুযোগ পেলেই পিকে হালদারের মতো হাজার কোটি টাকা নিয়ে নিজেদের আসল ‘মাতৃভূমি’ ভারতে পারি জমাচ্ছে; করে যাচ্ছে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি। সময় এসেছে তাই এই ক্ষমতাবান ‘আপনজন’দের দুর্নীতি আর জুলুমের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলার ও তাদেরকে রুখে দেওয়ার। না হলে এই আপনজনেরা প্রদীপ আর সুভাষ চন্দ্রের মতো করে ঘরে ঢুকে এদেশের মুসলিমদের লুট করেই যাবে।
প্রতিবেদক : মাহমুদ উল্লাহ্
তথ্যসূত্র :
১. এসপির সম্পদ ৩ কোটি টাকার, স্ত্রীর সাড়ে ১৩ কোটি
– https://tinyurl.com/mwdraj73
২. এসপির সম্পদ ৩ কোটি স্ত্রীর সাড়ে ১৩ কোটি
– https://tinyurl.com/y6rsdwaw