পুতুল সরকারের পশ্চাৎপদতার সময় থেকে ইসলামি ইমারত সরকারের অগ্রযাত্রার যুগ

- মুহাম্মাদ ইকবাল

0
493

আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের আগ্রাসন অন্ধকার সময়ে আফগানিস্তানে কথিত প্রজাতন্ত্রের শিকড় ও ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ফলস্বরূপ, কথিত প্রজাতন্ত্রের সেই প্রস্তাবনায় বিদেশী প্রভুদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিলো। প্রতিটি উদ্যোগ ও কার্যকলাপে তখন আমেরিকা, ন্যাটো এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট লাভ-ক্ষতিকে অতিরিক্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হতো।

যেহেতু আগেকার পুতুল সরকারের শক্তি, ক্ষমতা ও আর্থিক সাহায্যের উৎস ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাই আমেরিকার কংগ্রেস থেকেই আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্রের সকল অনুশাসন জারি হওয়া এবং রাজধানীর ঐ ভাড়াটে নেতাদের উপর সেগুলো চাপিয়ে দেওয়াটা একরকম স্বাভাবিক ছিলো। একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে, “যে রুটি সরবরাহ করে সে আদেশও দিয়ে থাকে।”

এসকল কারণে বিগত দুই দশকের কথিত প্রজাতান্ত্রিক শাসনে রপ্তানি বাণিজ্যের ভিত্তি মজবুতকরণ এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। সেই আমলে বিদেশি প্রভুদের স্বার্থ এবং যুদ্ধবাজদের পকেট ভারী করাটাই সব সময় আফগানিস্তানের জাতীয় স্বার্থের উপর প্রাধান্য পেয়েছে।

পক্ষান্তরে, আমরা যদি ইমারতে ইসলামিয়া সরকারের বিগত আড়াই বছরের শাসনামলকে মূল্যায়ন করি, তাহলে আমরা লক্ষ্য করবো যে- ইসলামিক ইমারত সরকার পূর্ণ স্বাধীনতা ও দৃঢ়তার সাথে আফগান জনসাধারণের স্বার্থকে আমলে নিয়েই সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আর এসকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কখনো কখনো প্রতিবেশী দেশ এবং বৃহত্তর বিশ্বের সাথে বিদ্যমান উত্তেজনা ও বিরোধকে দৃঢ়ভাবে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন ইমারতে ইসলামিয়ার তালিবান উমারাগণ।

উদাহারণস্বরূপঃ
কুশতেপা খাল খননের প্রথম পর্যায় যখন সম্পন্ন হয়, তখন এটি উজবেকিস্তানে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করবে দাবি করে উজবেক রাষ্ট্রপতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য ইমারত সরকারকে আহবান জানিয়েছিলেন।
যখন কামাল খান ও কাজাকি ড্যাম থেকে ইরানে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছিলো, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইসলামিক ইমারতের প্রতি সতর্কতা জারি করেছিলো।
কুনার ড্যাম সার্ভের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করার সময়ও পাকিস্তানের শীর্ষত্বস্থানীয় নেতাবর্গ হুমকি দিয়েছিল যে, উক্ত নির্মাণ কাজ পাকিস্তান এবং ইসলামিক ইমারতের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করবে এবং সরাসরি দ্বন্দ্বের দিকে পরিচালিত করবে।

কিন্তু সব ধরনের হুমকি ও সতর্কতা সত্ত্বেও ইসলামিক ইমারত সুদৃঢ় সিদ্ধান্তগুলোর উপর অটল ছিলো।

প্রতিবেশী দেশ সহ সমগ্র বিশ্ব স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে যে, ইসলামিক ইমারত এতো নিষেধাজ্ঞার মাঝেও দেশীয় সম্পদ বিকশিতকরণ এবং রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করে যাচ্ছে।
পক্ষপাতদুষ্ট দেশগুলো ইসলামিক ইমারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নির্মাণ সংক্রান্ত পরিকল্পনাসমূহকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেরাই বিভ্রান্তির স্বীকার হচ্ছে। প্রকল্পগুলো বাধগ্রস্ত করতে তারা কখনো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আবার কখনো অন্যান্য শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশের সমর্থন পেতে চেষ্টা করেছে। তবে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের দৃঢ় প্রকৃতি এবং নিজেদের বসতিকে কেন্দ্র করে ইমারতের অবিচল সংকল্প প্রদর্শনের বিপরীতে তাদের এসকল অপচেষ্টা ধূলায় মলিন হয়ে যায়।

মহান আল্লাহর অনুগ্রহে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান এই যাত্রী ও মালামাল বোঝাই জাহাজের অনুরূপ এই জাতিকে ধ্বংসাত্মক আক্রমণকারী ঝড় কবলিত সমুদ্র থেকে রক্ষা করে সঠিক পথে চালনা করছে। এই জাহাজ ইসলামি ইমারতের সৎ, দক্ষ ও কর্মনিষ্ঠ নাবিকদের নেতৃত্বে অচিরেই অভীষ্ট গন্তব্যে নিরাপদে নোঙর ফেলতে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ।



মূল লেখক: সায়েস সাঈদি
ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের অফিসিয়াল সাইট থেকে সংগৃহীত
অনুদিত ও ইষৎ পরিমার্জিত



 

তথ্যসূত্র:

1. From the Destructive Era of Puppet Regime to Constructive Period of Sovereign Government
https://www.alemarahenglish.af/from-the-distractive-era-of-puppet-regime-to-constructive-period-of-sovereign-government/

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেনিয়ায় ২টি সামরিক ঘাঁটি ও বিস্তীর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলো আশ-শাবাব
পরবর্তী নিবন্ধলেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হামাসের উপপ্রধান নিহত