বর্তমান যামানার প্রভাবশালী মিডিয়াকে একবিংশ শতাব্দির সর্বোচ্চ উন্নতি ধারণা করা হয়। এ আবিষ্কারের সূচনালগ্ন থেকেই মনে করা হচ্ছে যে, এর দ্বারা মানুষের সঠিক পথ প্রদর্শন ও মেধাকে শাণিত করা সম্ভব হবে; সত্য-মিথ্যা, সঠিক ও ভ্রান্তির মধ্যে পার্থক্য করা যাবে। আর সাধারণ জনগণের সামনে বাস্তবতা দিবালোকের চেয়েও স্পষ্ট হবে।
কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় হলো, মিডিয়ার মতো প্রভাবশালী মাধ্যমটি শুরু থেকেই ডাকাতের ভয়াল থাবার শিকার। তারা জনগণকে সঠিক পথ প্রদর্শনের পরিবর্তে বিভ্রান্ত করছে এবং ধোঁকার মাধ্যমে তাদের মগজ ধোলাই করছে। এই মিডিয়াগুলো পরিষ্কার বিষয়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের মন ও মস্তিষ্ককে সঠিক পথ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে এবং পরবর্তীতে এসব মানুষের বিকৃত মেধার মাধ্যমে তাদের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর জ্বলন্ত প্রমাণ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আফগানিস্তান। এখানে ২০০১ সাল থেকে আমেরিকা আগ্রাসন চালানো শুরু করেছে। সূচনালগ্ন থেকেই হলুদ মিডিয়ায় এ হামলাকে ‘সন্ত্রাস নির্মূলের অপারেশন’ নামে প্রচার করা হয়। বিদেশী আগ্রাসীদেরকে বলা হয় স্বাধীনতাকামী বা শান্তিবাদী; আর যেসব আফগান মুসলিম জনসাধারণ নিজেদের ঈমান ও দেশ রক্ষায় আগ্রাসী শক্তির মোকাবেলায় হাতে অস্ত্র ধরেন, তাদেরকে আখ্যা দেওয়া হয় সন্ত্রাসী।
অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত; আগ্রাসী মার্কিনীরা হলো সন্ত্রাসী আর আফগান মুজাহিদ জনসাধারণ হলেন স্বাধীনতাকামী-শান্তিবাদী। কেননা, আন্তর্জাতিক নীতি মোতাবেক সন্ত্রাস বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যে নিজের অন্যায় চাহিদা পূরণের জন্য জনসাধারণের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করে। বর্তমানে আমরা দেখছি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীচক্র ও তাদের দোসররা জনসাধারণের মাঝে চরমমাত্রার ত্রাস সৃষ্টি করছে, বিপর্যস্ত করেছে জনজীবন।
আফগানিস্তানে প্রতি রাতে মার্কিনী বোমারু বিমানের গোলার আঘাতে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরা বাছবিচারহীনভাবে হত্যা করে আফগান জনসাধারণকে। নারী-শিশু-বৃদ্ধদের পর্যন্ত রেহাই দেয় না মার্কিনী ও তাদের দালাল নরপশুরা। তাদের এই সন্ত্রাস জনসাধারণকে সারাক্ষণ আতংকিত করে রাখে। কোথায় আর কখন না জানি ঝাঁপিয়ে পড়ে মার্কিনীরা—এই চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে আফগান মুসলিমদের। কেননা, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার, বসতবাড়ি থেকে শুরু করে মার্কিনীদের থেকে নিরাপদ নয় আফগানিস্তানের হাসপাতালগুলোও। মোটকথা হলো, জনসাধারণকে লক্ষ্য করে চালানো এ ধরনের নৃশংস হামলার মাধ্যমে মার্কিনীরা সবচেয়ে ভয়ানক সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
অন্যদিকে মুজাহিদগণ আগ্রাসী সন্ত্রাসীদের থেকে নিজ দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করছেন। অবশ্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ এটাই প্রথম নয়। বরং বিগত শতাব্দীতেও মুজাহিদগণ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছিলেন এবং সেই জিহাদে স্বাধীনতা পর্যন্ত অর্জন করতে সক্ষম হন। সেই সময়ের সমাজতন্ত্র স্বাধীনতাকামীদের বিদ্রোহী বলেছিল। আর আজ সেই বিদ্রোহীরাই জাতীয় বীর।
ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের এ বিশ্বাস আছে যে, আমাদের সংগ্রাম যেমনিভাবে দ্বীনি দিক থেকে ফরজে আইন জিহাদের অন্তর্ভুক্ত তেমনিভাবে আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ীও সর্বোত্তম সংগ্রাম। ইমারতে ইসলামিয়ার মুজাহিদগণ সন্ত্রাস নয় বরং সত্য-ন্যায়ের পথে সাহসী যোদ্ধা এবং স্বাধীনতা অর্জনকারীদের বীর। এ বাস্তবতা আজ পর্যন্ত শত্রুদের প্রোপাগান্ডার চাদরে ঢাকা আছে। ইতিহাস এ বাস্তবতাকে প্রকাশ করবে। আর আগামী প্রজন্ম ইমারতে ইসলামিয়ার ব্যাপারে এমন গর্ব করবে যেমনটি ইংরেজদের বিরুদ্ধে বাহাদুর মুজাহিদগণের ব্যাপারে করেছিলেন, সমাজতন্ত্রী সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে জিহাদকারীদের ব্যাপারে করেছিলেন।
[আফগানিস্তান ইসলামী ইমারতের অফিসিয়াল সাইট থেকে অনূদিত।]
alhamdulillah
রাইট
অনেক সুন্দর বিশয় তুলে ধরছেন ভাই। আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুন
সহমত