প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং ইসলামাবাদ প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
আঞ্চলিক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শুরু থেকে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের মধ্যস্থতায় বিবাদমান দলগুলো পূণরায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছে। ফলে এই আলোচনা সফল করতে প্রথম দফায় ১মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে টিটিপি। এরপর দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতির এই সময়সীমা আরও ৫ দিন বাড়িয়ে ১৫ মে পর্যন্ত লম্বা করা হয়।
কিছু আন-অফিশিয়াল সূত্র জানায় যে, এই যুদ্ধবিরতির শর্তে পাকিস্তান সরকার টিটিপি’র বেশ ক’জন কারাবন্দী নেতা ও যোদ্ধাকে মুক্তি দিয়েছে। তবে বন্দী মুক্তিদের এই সংখ্যা কতজন, তা নিয়েও আছে মতপার্থক্য। কেননা কিছু সূত্র বলছে তাদের সংখ্যা ৩০ জন, আবার অন্য সূত্র বলছে ১০০ জন।
যাইহোক, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) তৃতীয় দফায় আবারও যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়েছে। যা ১৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত বলবত থাকবে। এই প্রসংঙ্গে টিটিপির মুখপাত্র মুহাম্মদ খোরাসানী (হাফি.) এবং ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র মুহতারাম জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ (হাফি.) তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেককে উর্দু ও পশতুন ভাষায় বিবৃতি জারি করেছেন।
যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে নতুন বিবৃতি:
টিটিপির মুখপাত্র উল্লেখ করেছেন যে, ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান সরকারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিযুক্ত আলোচনা কমিটির সঙ্গে প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এই আলোচনায় পাক-সরকার ও প্রতিরোধ বাহিনী টিটিপি কর্তৃক নিয়োজিত কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন গোত্রের প্রায় ৪৮ জন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটিও উপস্থিত রয়েছে।
মুখপাত্রের জারি করা বিবৃতি অনুযায়ী, আলোচনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ গত ১৩ ও ১৪ মে দলগুলো আলোচনার টেবিলে বসে এবং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আর এই আলোচনাকে ফলপ্রসু করতে যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়। তাই এই প্রেক্ষাপটে, ঈদ উল-ফিতরের সময় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
অন্যদিকে, “ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের” মুখপাত্র মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদও (হাফি.) এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি বিবৃতি জারি করেছেন।
জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ বলেন, কাবুলে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দলগুলো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। “আমরা মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একটি সফল আলোচনা প্রক্রিয়ার জন্য সরল বিশ্বাসে চেষ্টা করছি। আর আমরা আশা করি উভয় পক্ষই এই বিষয়ে সহনশীল ও নমনীয় হবে।”
মনে করা হচ্ছে, আলোচনা থেকে কোনো ফল বের হলে আফগানিস্তান সীমান্ত লাইনে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়! যেসব শর্তে দীর্ঘমেয়াদি এই যুদ্ধবিরতি হবে, তা কী মেনে নিবে পাকিস্তানের গাদ্দার সামরিক বাহিনী? যারা চলমান এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেও টিটিপি’র অবস্থানে হামলা চালিয়েছে এবং টিটিপি’র বীর যোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। যাতে ২০ এরও বেশি সেনাকে হারিয়ে পলায়ন করেছে গাদ্দার পাকি সামরিক বাহিনী।
তাই সামনের সময়গুলোই বলে দিবে টিটিপি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতিতে যাবে, নাকি অসম এক লড়াইয়ে। যেই লড়াই পুরো পাকিস্তানে ইসলামি শরিয়াহ্ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে। যা বার বার দলটির বিবৃতিতে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের শেষ সময়ে শুরু হওয়া আলোচনায় প্রতিরোধ বাহিনী টিটিপি নিম্নলিখিত তিনটি শর্ত পেশ করেছিল:
– টিটিপি তৃতীয় দেশে একটি রাজনৈতিক কার্যালয় খুলবে।
– খাইবার পাখতুনখোয়া এবং উপজাতীয় অঞ্চল থেকে পাক-প্রশাসনকে অপসারণ করতে হবে।
– পাকিস্তানে ইসলামী নীতির উপর ভিত্তি করে সরকার গঠন করতে হবে।
তখন টিটিপি’র দেওয়া এসব শর্ত প্রত্যক্ষাণ করে পাকিস্তান সরকার। শুরু হয় দলগুলোর পারস্পর বিরোধী বক্তব্য। সেই সাথে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তখন টিটিপি’র উপর হামলাও চালায় পাকি সেনাবাহিনী। ফলে আলোচনার টেবিল তখনকার জন্য ভেস্তে যায় এবং পূণরায় সংঘর্ষ শুরু হয়। আর নতুন এই সংঘর্ষের ফলে অতীতের যেকোন মাসের তুলনায় পরবর্তী মাসগুলোতে অধিক সংখ্যক পাকি সেনা টিটিপি’র অভিযানে নিহত ও আহত হয়।
লেখক : আলী হাসনাত
Allah mujahid vaider kbul kro
পাকিস্তানের সরকার টিটিপি মুজাহিদদের আলোচনা তখনই মানবে যখন পাকিস্তানের গাদ্দার সরকার একজন প্রকৃত দিনে মুজাহিদ হবেন। তবে আমি আল্লাহতালার কাছে দোয়া করি আবু সুফিয়ানের মত শেষবারের মতো হলেও তাকে যেন দিনের সঠিক বোঝ দান করেন। পুর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলামের পথে আসতে পারে। আমিন
পাকি সরকার নাকি,তাকী উসমানী হাফিঃ কে এই চুক্তিতে মধ্যস্তকারী হিসেবে কাবুলে যাওয়ার আহ্বান করেছে?