
আল-কায়েদা পূর্ব আফ্রিকা ভিত্তিক প্রতিরোধ আন্দোলন হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসনের সামরিক নেতৃত্ব নিশ্চিত করেছে যে, মুজাহিদিনরা বৃহস্পতিবার ভোরে বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত এক অভিযানের মাধ্যমে সোমালিয়ার কৌশলগত বালাদ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এসময় মুজাহিদিনরা শত্রু কারাগার থেকে শত শত বন্দীকে মুক্তি দিয়েছেন।
সূত্রমতে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে সোমালিয়ায় সংঘাত তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এসব সংঘর্ষের পর পশ্চিমা সমর্থিত মোগাদিশু বাহিনীকে হটিয়ে ১১ টিরও বেশি শহর এবং অনেক সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। সেই ধারাবাহিকতায় মুজাহিদিনরা গত বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি, ফজরের নামাজের পর, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত কৌশলগত শহর বালাদে বৃহৎ পরিসরে একটি সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেন। এই অভিযানের অংশ হিসাবে শহরের দু’দিক থেকে ভারী অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে আশ-শাবাবের শত শত মুজাহিদ আক্রমণ শুরু করেন।
মুজাহিদিনরা প্রথম আধঘন্টার তীব্র লড়াইয়ের মাধ্যমে শহরের উপকণ্ঠে শত্রুর সমস্ত প্রতিরক্ষা ভেদ ধ্বংস করেন। এতে মুজাহিদদের হামলায় অসংখ্য শত্রু সৈন্য নিহত এবং আহত হয়। শত্রুর প্রতিরক্ষা ভেদ ধ্বংসের পর মুজাহিদিনরা শহরের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে শুরু করেন। এসময় মুজাহিদদের বুলেটের সামনে নিজেদের সামলাতে না পেরে মোগাদিশু বাহিনী ও দখলদার বুরুন্ডিয়ান সৈন্যরা রাজধানীর দিকে পালিয়ে যায়। শত্রু বাহিনীর এই পলায়ন এবং মুজাহিদদের অগ্রসরের দৃশ্য দেখে শহরের কাঁচা-পাকা বাড়ি থেকে মানুষ বের হয়ে মুষ্টি হাতে তাকবির ধ্বনিতে মুজাহিদদের স্বাগত জানাতে থাকেন। শহরের কেন্দ্রে জনগণের আনসারের ভূমিকার ফলে মুজাহিদিনরা কয়েক ঘন্টার তীব্র লড়াইয়ের মাধ্যমে সেটেলমেন্ট সেন্টার, পুলিশ স্টেশন, সামরিক ও প্রশাসনিক ভবন, একাধিক সামরিক ঘাঁটি, চেকপয়েন্ট এবং কেন্দ্রীয় কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হন। মুজাহিদিনরা কেন্দ্রীয় কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখানে আটকে রাখা শত শত নিরপরাধ বন্দীকে মুক্তি দেন, যারা তাকবির ধ্বনি তোলে কারাগার থেকে দলে দলে মুক্ত আকাশের নিচে বেরিয়ে পড়েন।
এদিকে শহরের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করার পর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সামরিক ঘাঁটিগুলো থেকে সমস্ত সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ এবং সাঁজোয়া যানগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে আশ-শাবাব মুজাহিদদের। এসকল অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সাঁজোয়া যানগুলো সম্প্রতি শাবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য শহরে মজুদ করেছিল মোগাদিশু বাহিনী। শাবাবের এমন পদক্ষেপে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন যে, আশ-শাবাব শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পরিবর্তে শহরকে অবরোধ করার কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। ফলে শহরের কেন্দ্র থেকে সতর্কতাবশত প্রয়োজনীয় সমস্ত সামরিক যান ও অস্ত্র শস্ত্র সরিয়ে ফেলেছেন মুজাহিদিনরা।
অপরদিকে, শহরটি পুনরুদ্ধার করতে মোগাদিশু বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি হিসাবে একটি সামরিক সামরিক কনভয় পাঠায় মোগাদিশু বাহিনী। কিন্তু শক্তিবৃদ্ধি করতে আসা এই দলটিকে মুজাহিদিনরা বালাদ শহরের উপকণ্ঠে “ইলবাক” এলাকায় অতর্কিত হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন। এতে শক্তিবৃদ্ধি করতে আসা মোগাদিশু বাহিনীর অন্তত ২৩ সৈন্য হতাহত হয় এবং অন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
তথ্যসূত্র:
١. بيان للقيادة العسكرية لحركة الشباب المجاهدين: هجوم على مقرات العدو في بلعد، والسيطرة على المدينة وتحرير الأسرى وخسائر في صفوف الميليشيات الحكومية
– https://tinyurl.com/3azt4kzh