পাকিস্তানে ঢুকে মুরতাদ বাহিনীর উপর হামলার হুঁশিয়ারি আফগান তালিবানের

2
1730
পাকিস্তানে ঢুকে মুরতাদ বাহিনীর উপর হামলার হুঁশিয়ারি আফগান তালিবানের

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুনার প্রদেশের পাক-আফগান সীমান্তে পাকিস্তানি মুরতাদ বাহিনী ও আফগান তালিবান মুজাহিদদের মধ্যে বাকবিতণ্ডের ৩ মিনিটের অধিক সময়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইমারতে ইসলামিয়ার একজন মুজাহিদ পাকিস্তানি মুরতাদ বাহিনীকে উদ্দ্যেশ্য করে বলছেন, “ওয়াল্লাহি! আমি যদি তোমাদের সীমান্তে প্রবেশ না করে তোমাদেরকে এটি (নিজের রাইফেলকে দেখিয়ে) দিয়ে ধাওয়া না করি, তাহলে আমিও আমার বাপের বেটা না! ওয়াল্লাহি! তোমাদের আমি বাজোর এজেন্সির রাজধানী পর্যন্ত তাড়া করব।”

সম্মানিত পাঠকদের সুবিধার্থে আমরা উক্ত ভিডিওর বাক্যগুলো বাংলা অনুবাদ তুলে ধরছি:

তালিবান মুজাহিদ: তো তোমরা আমাকে বলতে চাচ্ছো যে “পরিস্থিতির” কারণে তোমরা আমার ও আমার গ্রামবাসীর উপর গুলি চালাতে বাধ্য? সীমান্তের এই পাড়ের পুরো অংশটাই তো আমাদের। অতএব যদি তোমরা আমাদের ভূমিতে আক্রমণ কর, তাহলে আমিও বাধ্য আমাদের নিরাপত্তার জন্য এই এম-ফোর রাইফেল দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।

ওয়াল্লাহি! আমি যদি তোমাদের সীমান্তে প্রবেশ না করে তোমাদেরকে এটি (নিজের রাইফেলকে দেখিয়ে) দিয়ে ধাওয়া না করি, তাহলে আমিও আমার বাপের বেটা না! বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছ?

কিন্তু ইমারাহ এবং তোমাদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে, শুধু এই কারণেই আমি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেইনি। অতএব আমি তোমাদেরকে শেষবারের মত সতর্ক করে বলছি, শেলিং করা বন্ধ কর, গোলাগুলি থামাও। আর যদি তোমরা না থাম, আমি তোমাদেরকে এই অস্ত্র দিয়ে দেখাবো কিভাবে থামতে হয়, আমি যদি বদলা না নেই তাহলে আমিও আমার পিতার সন্তান নই, বুঝতে পারলে?

তোমরা যা করছ এগুলো শুধুই বোকামি এবং নির্বুদ্ধিতা। আমার প্রতিবেশি হয়ে তুমি আমার সন্তানদের উপর হামলা করছ? তোমার কোনো ব্যাপারে সমস্যা থাকলে এখানে এসে বল, আমি সমাধানের ব্যবস্থা করছি!

পাকিস্তানী সেনা: আমাদের গ্রামে প্রতিদিনই কেউ না কেউ মারা যাচ্ছে! নারী-শিশুর কথা ভেবেই আমরা প্রত্যুত্তরে গুলি করি না।

তালিবান সেনা: তো তাহলে এখানে গুলি করছ কেন, ধৈর্য্যধারণ কর!

অপর এক তালিবান সেনা: তোমাদের কোন গ্রামবাসীর গুলি লেগেছে? প্রমাণ নিয়ে আস।

তালিবান সেনা: ভালো করে শুনে রাখো, আমি পূর্বের দূর্নীতিবাজ আফগান ন্যাশনাল আর্মির বর্ডার গার্ডের সৈন্য নই যে, আমাকে ঘুষ দিবে আর আমি চুপ হয়ে যাব। ন্যাটোভুক্ত ৫২টি দেশের সেনাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেছে যারা, আমি তাদের দলের সৈন্য। তোমরা এরূপ করতে থাকলে তাদের মত একই পরিণতি তোমাদেরও ভোগ করতে হবে।

অপর তালিবান সেনা: সকাল থেকেই আমাদের মাথার উপর দিয়ে শুধু তোমাদের বুলেটই যাচ্ছে! ওয়াল্লাহি! আমাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তোমরা আমাদের থেকে কি চাও?

তালিবান সেনা: এসব করা বন্ধ কর, আমরা পরষ্পরের প্রতিবেশী। তোমাদের নিজেদের স্বাধীন ভূমি আছে, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। তোমরা নিজেদের শত্রুদের হত্যা কর গিয়ে। কিন্তু (টিটিপির হামলার) প্রতিশোধ আমাদের থেকে নেয়া বন্ধ কর। সকালেও তোমাদের থামতে বলেছি, কিন্তু তবুও তোমরা লাগাতার আমাদের ঘরবাড়ি আর মসজিদে গুলি চালিয়েই যাচ্ছ।

তোমাদের যদি কুঠার অথবা এই বন্দুক দিয়ে আঘাত না করি, আমি নিজেকে তাহলে কাপুরুষ বলব! তোমরা নির্বোধের মত আচরণ করছ, কিন্তু আমরা নির্বোধ নই!

তোমাদের সীমান্তের দেয়ালে উঠে তোমাদেরকেই আমি হুঁশিয়ারি দিতে এসেছি কেবল আমার ঈমান ও সাহসের জোরে। আমি চাইলে এখনই ৩০-৩৫ জন মুজাহিদ পাঠিয়ে তোমাদের শায়েস্তা কর‍তে পারি, কিন্তু আমি চাই আমাদের প্রতিবেশীর সম্পর্ক অটুট থাকুক। আমি তোমাদেরকে প্রতিবেশীর চোখেই দেখি এবং এখনো দেখছি, কিন্তু যদি তোমাদের শত্রুর চোখে দেখা শুরু করি, ওয়াল্লাহি! তোমাদের আমি বাজোর এজেন্সির রাজধানী পর্যন্ত তাড়া করব।

তোমরা আমাদের উপর গুলি চালিয়ে কি প্রমাণ করতে চাও? ভিক্ষা করে গুলি সংগ্রহ করে হলেও আমি তোমাদের পালাতে বাধ্য করব, খিনযির কোথাকার!

ভিডিও লিংক: https://twitter.com/bsarwary/status/1442145921064742914?s=09

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅযথা পুলিশি হয়রানি বন্ধে রাইড শেয়ারিং চালকদের কর্মবিরতি
পরবর্তী নিবন্ধভোর রাতে সাদা পোষাকে মুফতি কাজী ইব্রাহিম সাহেবকে আটক