ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন’ (সিএএ) চালু করল ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনটি কার্যকর হওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিতর্কিত এই আইনে বলা হয়েছে যে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সি ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভারতে গেছে, তাদের সকলকেই নাগরিকত্ব দেবে হিন্দুত্ববাদী এই রাষ্ট্রটি। তবে এখানে মুসলিমদের বিষয়ে কোন উল্লেখ না করে শুধু অমুসলিমদের সুরক্ষার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। যার ফলে সারা দেশেই মুসলিমদের মধ্যে তা ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
ইতোমধ্যেই আইনটি নিয়ে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আসামে রাতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা আইনের অনুলিপি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। অন্যদিকে সোমবার রাতে দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হলে এর বিরুদ্ধে জোরদার ব্যবস্থা গ্রহণ করে হিন্দুত্ববাদী বাহিনীর সদস্যরা।
ভারতের অন্যতম উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা ও দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত সিএএ আইনটি পাস করা হয়। সেসময় সহিংসতায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, যার অধিকাংশই ছিলো মুসলিম।
আসামে বিতর্কিত এনআরসি (নাগরিক পঞ্জি) করার পর ১১ লাখ হিন্দুর নাগরিকত্ব বাতিল হলে, উদ্ভূত পরিস্থিতির সমন্বয় সাধন করতে তখন তারা এই সিএএ বিল নিয়ে আসে, যাতে করে মুসলিম বাদে বাদপড়া অন্যদের নাগরিকত্ব নিয়ে আর কোন সমস্যা না থাকে। সুতরাং এই সিএএ যে স্পষ্টভাবেই একটি মুসলিমবিদ্বেষী আইন, এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তথ্যসূত্র:
1. Protests in India over implementation of citizenship law excluding Muslims
– https://tinyurl.com/jvcsr6bh
2. Why is India’s Citizenship Amendment Act so controversial?
– https://tinyurl.com/bdcts3v8