গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের দাদরি জেলার নাই আবাদি এলাকায় একটি সড়ককে ইট-সিমেন্ট দিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী পুলিশ। সম্প্রতি সোশ্যাল মেদিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও থেকে এই খবর জানা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, নাই আবাদি এলাকায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় বন্ধ করে দেয়া সড়কটি দিয়ে মুসলিমরাই বেশি চলাচল করেন। সড়কটি নাই আবাদি এলাকাকে সরাসরি দাদরি জেলায় মূল বাজার এবং রেলওয়ে রোডের সাথে সংযুক্ত করে। রোডটি থাকাতে মুসলিম পিতামাতা তাদের সন্তানদের স্কুলে যাবার ব্যাপারে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারতেন, কেননা সড়কটিতে দূর্ঘটনা কম হতো।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সড়কটি এবার প্রথম বন্ধ করা হয়েছে – ব্যাপারটি এমন নয়। এর আগেও অনেকবার সড়কটিকে বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু এবার সড়কটিকে বন্ধ করে দেবার সময় মুসলিমদেরকে তাদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
তিনি আরো জানান, সড়কটি অন্তত ১০০ বছর আগে প্রাক্তন সমাজবাদী পার্টির এমএলএ মাহিনদার সিং ভাটির নিজস্ব জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছিল। তার ছেলে কংগ্রেস এর এমএলএ সামির ভাটিই সড়কটি বন্ধ করে দেবার পিছনে মূল হোতা বলে মনে করছেন এলাকাবাসী, যদিও সামির ভাটি নিউজ রিপোর্টারদের কাছে এই কথা অস্বীকার করেছে।
আরেক বাসিন্দা জানান, সড়কটিতে দেয়াল তুলে শাটার লাগানো হয়েছে। এটিকে দেখে এখন মনে হবে যেন এখানে কোনোদিন রাস্তাই ছিল না। দেয়ালের সামনে সারাক্ষণ পুলিশ পাহারা দেয় যাতে করে কেউ দেয়াল ভাঙতে না পারে।
উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, দেয়ালটি ইচ্ছাকৃতভাবে সড়কের ঠিক এমন জায়গায় বানানো হয়েছে যাতে এলাকার মসজিদ দেয়ালের অপর পার্শ্বে পড়ে। এতে করে মুসল্লীদের সালাত আদায় করতে অনেক দূর ঘুরে এসে মসজিদে প্রবেশ করতে হচ্ছে। একই ভাবে এলাকার একটিমাত্র ঔষধের দোকানও দেয়ালের কারণে এলাকা থেকে পৃথক হয়ে গেছে।
আরো উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, দেয়াল তৈরি করার পর নাই আবাদি এলাকার সব হিন্দু খুশিতে মেতে উঠেছে। দেয়াল তৈরি উপলক্ষ্যে তারা মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এমনকি তাদের অনেকে বলেছে, “অবশেষে রাস্তাটি থেকে ‘আবর্জনা’ অপসারিত হলো” – অর্থাৎ মুসলিমদের আবর্জনার সাথে তুলনা করছে ভারতের উগ্র হিন্দুরা।
আর কতদিন এমন করবে,একদিন বিজয় হবেই হিন্দুস্থান!