বুরকিনান সেনা কনভয়ে আল-কায়েদার হামলা: অন্তত ২৩ শত্রুসেনা হতাহত, বন্দী ১১

আলী হাসনাত

0
852
বুরকিনান সেনাদের বিরুদ্ধে আল-কায়েদার অভিযানের একটি দৃশ্য

সম্প্রতি বুরকিনা ফাসোর দক্ষিণাঞ্চলিয় গৌরমা রাজ্যে একটি সামরিক কনভয়ে আতর্কিত হামলা চালিয়েছেন ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এতে দেশটির অন্তত ১৫ সৈন্য নিহত হওয়ার কথা সরকারের তরফ থেকেই জানানো হয়েছে। সেই সাথে অসংখ্য সামরিক যান ও অস্ত্র গনিমত পেয়েছেন ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গৌরমা রাজ্যের নাটিয়াবনি শহরে এই হামলাটি চালানো হয়েছে। আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী ‘জেএনআইএম’ এর একদল বীর মুজাহিদ গাদ্দার সেনাবাহিনীর একটি সরবরাহ কনভয় টার্গেট করে অতর্কিত হামলাটি চালিয়েছেন। ফলে সেখানে উভয় বাহিনীর মাঝে তীব্র গুলাগুলির ঘটনা ঘটে।

কিন্তু আল-কায়েদা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে এই হামলা চালানোয় তাদের যোদ্ধাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, আলহামদুলিল্লাহ্‌। বিপরীতে বুরকিনান সেনাবাহিনীর কয়েক ডজন সৈন্য নিহত এবং আরও কয়েক ডজন সৈন্য আহত হয়েছে। সেই সাথে মুজাহিদগণ প্রচুর সংখ্যক সামরিক যান, অসংখ্য অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জামে পরিপূর্ণ গাড়ি এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কয়েকটি ট্রাক যুদ্ধলব্ধ মাল হিসেবে নিয়ে গেছেন। তাছাড়া অভিযান শেষে গাদ্দার সেনাবাহিনী উক্ত এলাকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

একইধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল গতমাসের শেষাংশে। যেখানে আল-কায়েদা যোদ্ধারা গাদ্দার সামরিক কনভয়ের ৯০টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করে দেন এবং কয়েক ডজন সাঁজোয়া যান সহ অসংখ্য অস্ত্র গনিমত হিসাবে নিয়ে যান।

যাইহোক, সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে বুরকিনান সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ তাদের ক্ষয়ক্ষতির আসল চিত্র গোপন করতে একটি ধোঁকাপূর্ণ বিবৃতি জারি করেছে। তার ভাষ্যমতে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গৌরমা রাজ্যের ফাদা এলাকায় তাদের একটি সরবরাহ কনভয়ে হামলা চালিয়েছেন একদল জিহাদি। বিবৃতিতে সে বলেছে, “দুর্ভাগ্যক্রমে এই লড়াইয়ের ফলে ১৩ সৈন্য এবং ২ ভিডিপি সদস্যসহ ১৫ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। সেখানে আরও ৪ জন (৩ সৈন্য এবং ১ ভিডিপি সদস্য) আহত হয়েছে। এছাড়াও আরও ১১ সৈন্যকে অপহরণ করা হয়েছে।”

ফাইল ছবি: বুরকিনান সেনাশিবিরে হামলা চালাচ্ছেন আল-কায়েদা যোদ্ধারা

এটি উল্লেখযোগ্য যে, সম্প্রতি বুরকিনা ফাসোতে আল-কায়েদা কর্তৃক হামলার ঘটনা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আল-কায়েদার এসব হামলার ফলে দেশে শত্রুদের কথিত নিরাপত্তা-ব্যবস্থার অবনতির ঘটনাগুলি অনেকক্ষেত্রে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেন, আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন দেশের শাসনভারের দায়িত্বে না থাকলেও, এটি সরকারকে প্রভাবিত করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী। তাছাড়া প্রতিরোধ বাহিনীটি ইতিমধ্যে দেশের ৪০ শতাংশেরও বেশি এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠা করেছে, আলহামদুলিল্লাহ্‌।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৮ বছর গুয়ান্তানামোতে বন্দী থাকার পর প্রমাণ হলো তিনি নির্দোষ!
পরবর্তী নিবন্ধকাশ্মীরে দখলদার হিন্দুত্ববাদীদের অপরাধনামা || পর্ব-৭ || আশিক হুসাইন মাসুদি হত্যা