
দখলদার ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও অনেক বেশি বিধ্বংসী বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ।
গাজায় ইসরায়েল প্রায় ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে, যা হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার ধ্বংসক্ষমতার ছয় গুণ। ৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে সে।
আলজাজিরা প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজাকে নিশ্চিহ্ন করতে সন্ত্রাসী ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে একাধিক অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা এই যুদ্ধকে মুনাফার উৎসে পরিণত করেছে।
গাজায় পরিচালিত তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’-কে একটি পরিকল্পিত মৃত্যুফাঁদ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলা হয়, এটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে অনাহারে থাকা মানুষদের গুলি করে হত্যা করা যায় বা তাদের গাজা ত্যাগে বাধ্য করা যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ মাসে গাজায় বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি। শুধু ৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার প্রাণ হারিয়েছেন ১১৮ জন, যাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন ত্রাণপ্রার্থী।
এই মুহূর্তে গাজা শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, বরং মানবতার একটি পরীক্ষাগার—যেখানে শিশু, নারী ও অসহায় মানুষদের ওপর নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে আসা এই ভয়াবহ সত্য আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে: নীরবতা আর নিরপেক্ষতা এখন অপরাধের সমান। ইতিহাসের এই নিষ্ঠুরতম অধ্যায়ে যদি বিশ্ব মানবতা চুপ থাকে, তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
তথ্যসূত্র:
1. 85,000 tons of explosives on Gaza, six times the destructive force of Hiroshima!
-https://tinyurl.com/yuc48t7s
2. Global firms ‘profiting from genocide’ in Gaza, says UN rapporteur
– https://tinyurl.com/ywas7crj