সিরিয়ায় আসাদ-ইরান-রাশিয়ার সম্মিলিত আক্রমণ, হতাহত ২০০ ছাড়িয়ে

- আব্দুল্লাহ্‌ মুনতাসির

0
691

মুসলিম উম্মাহ্ বর্তমানে ফিলিস্তিনি মুজাহিদিন কর্তৃক ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলকৃত ভূখণ্ডে ব্যাপক আক্রমণে আনন্দিত, এবং ইসরাইল কর্তৃক পুনরায় বর্বর আক্রমণ চালানো নিয়ে শঙ্কিত। তবে এরই মাঝে নীরবতার আড়ালে চাপা পরে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার মুসলিমদের উপর চালানো বর্বর গণহত্যা। উম্মাহর জন্য আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, ফিলিস্তিনে যারা মুসলিমদের পাশে দাঁড়াচ্ছে বা দাঁড়ানোর কথা বলছে, তাদের কেউ কেউ আবার সিরিয়ান মুসলিমদের উপর হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করছে।

অতি সম্প্রতি সিরিয়ার ইদলিব ও আলেপ্পোর বিভিন্ন শহর এবং গ্রামাঞ্চল, আসাদ-ইরান ও রুশ বাহিনীর আর্টিলারি এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। টানা তিনদিন ধরে চলা এই বর্বরোচিত হামলায় কমপক্ষে ২০০ বেসামরিক নাগরিক হতাহতের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে; হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি নারী ও শিশুরাও৷

স্থানীয় সূত্রমতে গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অতর্কিতভাবে এই নৃশংস আক্রমণ শুরু করে আসাদ-ইরান-রুশ সম্মিলিত বাহিনী। প্রথম দিনের হামলায় নিহত হন ১৩ জন, যাদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ২ জন শিশুও রয়েছে। একই দিনের হামলায় আহত হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ১৩ জন নারী ও ১৮ জন শিশু বলে জানা যায়।

হামলার দ্বিতীয় দিন, তথা ৬ অক্টোবর শুক্রবার নিহতের সংখ্যা ছিল ১১, যাদের মধ্যে ১ জন নারী ও ৩ জন শিশু। দ্বিতীয় দিনের হামলায় আহতদের সংখ্যা পৌঁছে যায় ৮১ তে, যাদের মধ্যে ১৪ নারী ও ২৪ শিশু রয়েছে।

এরপর, ৭ অক্টোবর হামলার তৃতীয় দিন শনিবারে নিহত হন ১১ জন মুসলিম, যাদের মধ্যে ১ জন নারী ও ৫ জন শিশু ছিল। এদিন আহত হন ২৪ জন, যাদের মধ্যে ১ জন নারী আর ৭ জন ছিল শিশু।

যৌথ বাহিনীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আক্রমণের শিকার হয় ইদলিব শহর ও এর আশেপাশের এলাকা, যেমন- জিসর আল-শুগৌর, জাবাল আল-জাবিয়া, মারাত আন-নাসান, কাফর নুরান শহর, আল-মাসতুমা, মার প্লেট, জেরিকো, সারমিয়ান, আল-আতারিব, দারাত আজ্জা, আদ-দানা, টারমানিন, মাহম্বল, কামিনাস, নীরাব, ইফিসাস, বিনিশ, মুসাইবিনসহ আরও অন্যান্য শহর ও গ্রাম৷

ইরান এই হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছে। আর ইরান যেখানে যায়, হিজবুল্লাহ্ সেখানে অবধারিতভাবেই তাদের সাথে যোগ দেয়; সিরিয়াতেও এমনটাই ঘটেছে ও ঘটছে।

অথচ, এই দুটি পক্ষকেই আমরা দেখেছি যে, তারা ইসরাইলের দখলকৃত ভুখণ্ডে হামাসের আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদদের অপারেশন আল-আকসা ফ্লাডে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে ও সমর্থন প্রদান করেছে।
দুই ভূখণ্ডের মুসলিমদের প্রতি তাদের দুই রকম আচরণ।

সুতরাং, এব্যাপারে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যায় যে, শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো তাদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করেই কেবল সমর্থন প্রদান বা বিরোধিতা করে থাকে।

ফিলিস্তিনি মুসলিমদের মতো করেই তাই উম্মাহর উচিৎ সিরিয়ার মুসলিমদের সাহায্যার্থেও যথাসাধ্য প্রচেষ্টা ব্যয় করা।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘হে ইহুদীরা! খাইবারের কথা স্মরণ করো’ 
পরবর্তী নিবন্ধবেসামরিক স্থাপনায় কেনিয়ান বিমান হামলা, শাবাবের বিবৃতি