পাকিস্তানের জনপ্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। দেশটির মুরতাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর, গত নভেম্বর মাসে টিটিপি পরিচালিত সকল হামলার বিবরণ প্রকাশ করেছে মুজাহিদ দলটি।
প্রকাশিত বিবরণ অনুসারে, গত নভেম্বর মাসে টিটিপির মুজাহিদগণ পাকিস্তানের মুরতাদ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বমোট ৫৯ টি হামলা চালিয়েছেন, যা গত দুই বছরের অন্য যেকোন মাসের তুলনায় বেশি।
মুজাহিদগণ এসব অভিযানের ২৪টি পরিচালনা করেছেন বান্নু প্রদেশে, ১৫টি ডিআইখানে, ৯টি পেশওয়ারে, ৩টি করে মোট ৬টি মরদান ও মালাকন্দে, ৩টি বেলুচিস্তানে এবং ২টি কোহাটা প্রদেশে।
তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের জানবায মুজাহিদদের এসব বীরত্বপূর্ণ হামলায় গাদ্দার পাকিস্তান সেনাবাহিনী, পুলিশ, এফসি, এসএসজি এবং আইএসআই এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সহ কমপক্ষে ১০০ সদস্য হতাহত হয়েছে। এছাড়াও এসব অভিযানে মুজাহিদগণ গাদ্দার বাহিনীর ৫টি সামরিক স্থাপনা এবং অন্তত ১০টি গাড়ি ধ্বংস করেছেন।
পাশাপাশি, মুজাহিদগণ ২৫টি অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং ১টি গাড়ি গনিমত লাভ করেছেন। অপরদিকে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান থেকে ১৫ পুলিশ সদস্যকে বন্দী করেছেন মুজাহিদগণ। এই বন্দীদেরকে পরে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, গত মাসে পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খান ও লাকি মারওয়াতে মার্কিন বাহিনী ও পাকি-বাহিনী লাগাতার ৩দিন ধরে টিটিপির বিরুদ্ধে যৌথ সামরিক অভিযান চালায়। এসময় মার্কিন বাহিনী টিটিপির অবস্থান লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালালে ৩জন মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেন। ফলশ্রুতিতে টিটিপির বীর মুজাহিদগণ পাল্টা হামলা চালালে নাপাক বাহিনীর অন্তত ৭সেনা নিহত এবং আরও বহু সংখ্যক সৈন্য আহত হয়।
এছাড়াও দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেও পাকিস্তানের গাদ্দার সামরিক বাহিনী তা লঙ্ঘন করে বারবার টিটিপির অবস্থানে হামলা চালায়। ফলশ্রুতিতে যুদ্ধবিরতির ৩য় মাসে এসে মুজাহিদগণ প্রতিরক্ষামূলক অভিযান শুরু করেন এবং পাকিস্তান প্রশাসনকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে বলে।
কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেই টিটিপির শীর্ষস্থানীয় আমীর উমর খালেদ খোরাসানী রহিমাহুল্লাহকে বন্দী করে গাদ্দার বাহিনী। এর একদিন পরই কথিত আইইডি বিস্ফোরণের নাটক সাজিয়ে তাঁকে শহীদ করে দেয়। শাইখ উমর খালেদ খোরাসানী রহিমাহুল্লাহ ছিলেন, আফগানিস্তানে চলতে থাকা শান্তি-আলোচনা কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
শাইখকে শহিদ করা সহ টিটিপির আরও একাধিক কমান্ডারকে এভাবে প্রতারণামূলক ভাবে শহিদ করে পাকিস্তান। গাদ্দার পাকিস্তান প্রশাসনের এমন জঘন্য কাজের ফলশ্রুতিতে গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে দীর্ঘ ৭মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়ে গাদ্দার পাকি-সামরিক বাহিনীর উপর সর্বাত্মক হামলা চালানোর ঘোষণা দেয় টিটিপির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
নতুন এই আদেশের পর, প্রথম আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে টিটিপির মুজাহিদগণ পাকিস্তান জুড়ে ৭টি হামলা চালান। এর মধ্যে কোয়েটায় একটি শহীদী হামলা ছিল লক্ষণীয়। এই হামলায় পশ্চিমাদের ক্রীড়নক গাদ্দার পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অন্তত ৫০ সৈন্য হতাহত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে ৪টি সাঁজোয়া যান।
একদিকে ইমরান খান ও শাহবাজ খানের দ্বন্দ্বে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে টিটিপির এমন অভূতপূর্ব সামরিক অভিজান নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের মুরতাদ সরকার ও গাদ্দার বাহিনীকে ব্যাপক কোণঠাসা করে ফেলেছে। সবরের সাথে উপযুক্ত যুদ্ধ কৌশল বজায় রেখে মুজাহিদদের এই অভিযান অব্যাহত রাখলে পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে দ্রুত পরিবর্তন আসতে পারে ইনশাআল্লাহ।
লিখেছেন: আলী হাসনাত