মৃত্যুমুখে ট্রলারে সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গা মুসলিমরাঃ জানাচ্ছেন উদ্ধারের আকুতি

0
681

সাগারের কিনারায় মৃত ডলফিন বা তিমি ভেসে এসেছে। কেন কী কারণে তিমিগুলো মারা গেল- এ নিয়ে মিডিয়াগুলোকে প্রায়ই দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়, গবেষণা চলে বিস্তর। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে ২০০ জন নিপিড়িত রোহিঙ্গা মুসলিমদের বহনকারী দুটি ট্রলার বিকল হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে সাগরে।

ট্রলার থেকে ফোনে বার বার সাহায্য ও উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছে বিপদগ্রস্থ রোহিঙ্গা মুসলিমরা। কিন্তু তাদেরকে মানবিক সহায়তা কিংবা উদ্ধারে কোন রাষ্ট্রই এখন পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি। যে মিডিয়া মৃত তিমির জন্য এতো মায়াকান্না করতো সেই মিডিয়া এখন রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিপদে কোন মায়াকান্না নেই। এমনকি বিপদের খবরটিও প্রচারেরও নেই কোন আগ্রহ।

মৃত তিমির খবর ফলাও করে প্রচারণা করলেও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নীরব দালাল মডিয়া- ছবি: আরটিভি।

এদিকে বিকল হয়ে দিকবিদিক ঘুরে ফেরা দু’টি রোহিঙ্গা ট্রলারের একটি ইন্দোনেশিয়ার মালাক্কা প্রণালীতে অবস্থান করছে বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত তাদের সাহায্যের প্রয়োজন জানিয়ে ফোনে কথা বলেছে ট্রলারের মাঝি। মিয়ানমারের মানবাধীকার কর্মী অং কিয়াউ মো ফোনে তাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, “সাগরে ভাসমান রোহিঙ্গা ট্রলারটি থেকে ফোনে আমাকে জানানো হয়েছে যে, তাদের দ্রুত সাহায্য ও উদ্ধারের প্রয়োজন। ট্রলারে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা ক্ষুধা ও ডিহাইড্রেশনের কারণে মারা মারা যাচ্ছেন। এবং গত দুইদিন আগে তাদের খাবার শেষ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ট্রলারটি মালাক্কা প্রণালীতে নোঙর করা হয়েছে, যা ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশি দূরে নয়। দ্রুত তাদের সাহায্য ও উদ্ধার প্রয়োজন নতুবা তারা সবাই মারা পড়ার আশংকা রয়েছে।”

অং কিয়াও মো এর সাথে রোহিঙ্গাদের ফোনালাপের তালিকা- ছবি টুইটার।

উল্লেখ্য যে, গত নভেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে তিনটি ট্রলার মালয়েশিয়ার অভিমুখে রওয়ানা দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনটি ট্রলারই বিকল হয়ে পড়ে। ফলে এগুলোতে থাকা রোহিঙ্গারা চরম বিপদের মুখোমুখি হয়ে সাগরে ভাসতে থাকে। এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর আন্দামান সাগরে ভাসতে থাকা একটি ট্রলার থেকে ১৫৮ জন রোহিঙ্গাকে উদ্বার করে ভিয়েতনামের অফশোর গ্যাস ও তেল কোম্পানি। এরপর তাদেরকে অমানবিকভাবে সন্ত্রাসী মিয়ানমার জান্তা সরকারের কাছে তুলে দেয়া হয়। অথচ মিয়ানমার জান্তার নির্যাতন থেকে বাঁচতেই তারা গত পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।

এদিকে, জান্তার হাতে তুলে দেয়া রোহিঙ্গাদের পরবর্তীতে আর কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে তাদেরকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করেছে বর্বর জান্তা সরকার।

আজ ভাসমান রোহিঙ্গা মুসলিমদের উদ্ধার করতে কিংবা তাদের মুখে অন্তত একটু খাবার তুলে দিতে কাউকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না। মুসলিমদেরকে তাই জালেমদের তৈরি করা কৃত্রিম সীমান্তের পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে এক উম্মাহ হয়ে নিজেদের সমস্যা নিজেদেরকেই সমাধান করতে পরামর্শ দিয়ে আসছেন ইসলামী বিশ্লেষকগণ।



 প্রতিবেদক :  মুহাম্মাদ ইব্রাহীম  



 তথ্যসূত্র: 
1. Urgent rescue required!!
The Rohingya boat floating in the sea called a few minutes ago and told me that people people are dying due hunger and ddehydration. The boat is anchored and seems that they are in in the Strait of Malacca, not far Indonesia –
https://tinyurl.com/yw8ernw2

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামরিক উন্নয়ন কেন মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ!
পরবর্তী নিবন্ধস্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণঃ ক্রমবর্ধিষ্ণু অপরাধ প্রবণতার সমাধান কি?