দীর্ঘ এক মাস ধরে সাগরে ভেসে থাকার পর রোহিঙ্গাদের বহনকারী ট্রলারটি ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি ডুবে গেছে। ট্রলারটিতে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া অন্তত ১৮০ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। এতে থাকা সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর গত ২৪ ডিসেম্বর এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ট্রলারে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ জন্য ধারণা করা হচ্ছে, সাগরে থাকা ট্রলারটি ডুবে গেছে। এবং মৃত্যু হয়েছে সবার।
গত নভেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে নৌযানটি মালয়েশিয়ার উদ্যেশ্যে যাত্রা করেছিল। যে কোন কারণে এটি গত ২ ডিসেম্বর বিকল হয়ে সাগরে দিকবিদিক ঘুরাচ্ছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্ববাসীর কাছে উদ্বারের আকুতি জানিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছে স্যাটেলাইট ফোনে যোগাযোগ করে আসছিল অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিমরা। কিন্তু কেউই তাদের উদ্বারে এগিয়ে আসেনি। মানবাধিকার ও কথিত নারী অধিকার নিয়ে আফগান-সোমালিয়ার মতো মুসলিম দেশগুলোতে হস্তক্ষেপ করে আসলেও, রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের উদ্বারে কোন উদ্বোগ নেয়নি। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বিপদের খবরটি পর্যন্ত তেমনভাবে প্রচার করেনি কোন মিডিয়া।
উল্লেখ্য যে, হিংস্র বৌদ্ধদের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজ দেশ আরাকান ত্যাগ করতে বাধ্য হয় রোহিঙ্গারা। এরপর প্রতিবেশি দেশগুলোতে শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন তারা। তেমনিভাবে নতুন জীবনের সন্ধানে রোহিঙ্গাদের একটি দল গত নভেম্বর মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল তিনটি ট্রলার নিয়ে। ২রা ডিসেম্বরের দিকে ট্রলারগুলো বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে থাকলে দুইটি ট্রলার উদ্ধার করা হয়; আর ডুবে যাওয়া ট্রলারটি গত ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছিল।
এদিকে ডুবে যাবার ২দিন আগে গত ২১ ডিসেম্বর রাতে ভাসমান ট্রলারটির কাছে ৫টি ভারতীয় জাহাজ পৌঁছেছিল। কিন্তু তারা খাবার ও পানীয়ের অভাবে চরম বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের উদ্ধার না করে চলে আসে। ঠিক কী উদ্দেশ্যে তারা সেখানে গিয়েছিল এবং কেন উদ্বার করেনি তা জানা যায়নি। গণমাধ্যমের কাছে এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হয়নি হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় কোস্ট গার্ডের কর্মীরা।
দীর্ঘ এক মাস যাবৎ সাগরে ভাসছিল ট্রলারটি, ডুবে যায়নি। কিন্তু ভারতীয় কোস্ট গার্ড সেখানে পৌঁছানোর মাত্র দু’দিন পরই ট্রলারটি ডুবে যায়, যা নিয়ে সন্ধেহের সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতীয় কোস্ট গার্ড মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্ধারের আহ্বান জানানোর প্রেক্ষিতেই রোহিঙ্গা ট্রলারের কাছে গিয়েছিল, কিন্তু উদ্বার না করে ফিরে আসে। আর এর দু’দিন পরই ট্রলারটি ডুবে মারা যায় সবাই। ফলে মুসলিমবিদ্বেষী ভারতীয় বাহিনীর বর্বরতার সম্ভাবনা ও সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Tragic update: Since our statement yesterday, UNHCR has received unconfirmed reports of a separate boat – with 180 Rohingya, missing in the sea. Relatives have lost contact. Those last in touch presume all are dead-
– https://tinyurl.com/2tetpp4h
180 জনের ট্রলারটি ইন্দোনেশিয়া তে গিয়েছে। সেটিই হবে হয়ত।
https://fb.watch/hGTFhS2dnq/
এই লিংকে দেখতে পারেন